মাওবাদীদের থেকেও বিজেপি ভয়ঙ্করঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

একুশের ভোটযুদ্ধের আগে পুরুলিয়ায় গিয়ে বিজেপিকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, পুরুলিয়া প্রথম ভাষা আন্দোলনের সাক্ষী। পুরুলিয়া কখনও বহিরাগতদের কাছে মাথা নত করেনি। বিজেপি আসলে পুরুলিয়া থাকবে না, রূপসী বাংলা থাকবে না। মাওবাদীদের থেকে বিজেপি আরও ভয়ঙ্কর। মমতা আরও বলেছেন, নির্বাচন এলে বঙ্গালের কথা মনে পড়ে! নির্বাচনের সময় মন্ডা-মিঠাই খাওয়াবে। আর ভোট মিটলে কাঁচকলা খাওয়াবে।

বিজেপিকে আক্রমণ করে তৃণমূলনেত্রী আরও বলেছেন, ফেক ভিডিও ছড়াচ্ছে বিজেপি। একদম ওদের বিশ্বাস করবেন না। লোকসভা নির্বাচনে মিথ্যা কথা বলে ভোট নিয়ে পালিয়ে গেল। যখন নির্বাচনের সময় বিজেপি নেতারা আসবেন, তাড়িয়ে দেবেন। তাঁর সভায় বিজেপি গোলমাল পাকাচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

টলিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের সঙ্গে বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের টুইট-যুদ্ধ প্রসঙ্গে এদিন মমতা বলেন, সায়নী ফিল্মে কাজ করে। তাকে ধমকাচ্ছে বিজেপি। বাংলাতে ধমকালে মুখটা লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে বন্ধ করে দেবে বাংলার মানুষ। ক্ষমতা থাকলে সায়নীর গায়ে হাত দিয়ে দেখাও। বয়স হয়ে গিয়েছে তবুও ভীমরতি যায় না। নাতনির বয়সী মেয়েকে রোজ হুমকি দিচ্ছেন।

পুরুলিয়ার সভায় এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের ঘরের মেয়ের মতোই, কারও বোন, কারও দিদি, কারও আন্টি। আমি আপনাদের পরিবারের একজন’। দলত্যাগীদের নিশানা করে মমতা এদিন বলেন, ‘যাঁরা চলে যাচ্ছেন, বুঝবেন আপদ বিদেয় হয়েছে। তিন ধরনের লোক রয়েছে রাজনীতিতে। লোভী, ভোগী, ত্যাগী’। উল্লেখ্য, সোমবার নন্দীগ্রামের সভাতেও তৃণমূলনেত্রীর গলায় এই মন্তব্য শোনা গিয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন শুরুই করেন পুরুলিয়ার সংস্কৃতিকে প্রণতি জানিয়ে। তিনি নাম না করেই বলেন, এই এলাকার  ইতিহাস জানতাম না। পুরুলিয়া প্রথম রাজ্য যেখানে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল।বহিরাগতর কাছে মাথা নত করেনি পুরুলিয়া। অতুলচন্দ্র ঘোষ, লাবণ্যকুমার ঘোষ, গোবিন্দ মাহাতো, গম্ভীর সিং মুরাদের নাম স্মরণ করিয়ে মমতার যুক্তি বহিরাগতরা এই সংস্কৃতিকে মান্যতা দিতে পারবে না। কিন্তু তাঁর সরকার ইতিমধ্যেই কুরমালি, কুরুক ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। মমতার কথায়, আমরা অলচিকিকে স্বীকৃতি দিয়েছি সাঁওতাল অকাদেমি তৈরি করেছি। আদিবাসী জমিরক্ষা আইন করেছি।

গণমাধ্যমই নয়, মমতার যুক্তি সমাজমাধ্যমকে অপব্যবহার করে বিজেপি। তিনি বলছিলেন, “ক্ষমতা আছে পুলওয়ামা নিয়ে বলার কথা! ক্ষমতা আছে দাঙ্গা নিয়ে মুখ খোলার কথা? বিজেপি ফেক ভিডিও ছাড়ে। হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে। এগুলিকে বিশ্বাস করবেন না। বিজেপি আসলে রূপসী বাংলা থাকবে না। মাওবাদীদের আস্ফালনের দিনগুলির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মমতার প্রশ্ন, যখন রাস্তায় রক্ত ঝড়ছিল কোথায় ছিল বিজেপি?  পাশাপাশি ট্যুরিজমকে সামনে রেখে তাঁর আশ্বাস পুরুলিয়ার ছেলেদের বাইরে যেতে হবে না।

নন্দীগ্রামের সভায় নিজেকেই প্রার্থী ঘোষণা করে মাস্টারস্ট্রোক খেলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সভায় চ্যালেঞ্জ ছিল ভাঙনের দিনে নীচুতলার মনজয়। কর্মীদের আত্মবিশ্বার পুনরুদ্ধার। শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্যদের দলত্যাগ সম্পর্কে নাম না করেই এদিন  মমতার উবাচ, আপদ বিদায় হয়েছে।

এদিন সভাস্থলে উপস্থিত কর্মীদের উৎসাহ বলছে, ভাঙা আত্মবিশ্বাস অনেকটাই জোড়া লাগতে চলেছে এই ভোকাল টনিকে। বাকিটা বলবে ভোটবাক্স।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*