সাধারণতন্ত্র দিবসের হিংসার ঘটনায় সরাসরি বিজেপির দিকেই আঙুল তুললো তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের অভিযোগ, ওই দিন ট্র্যাক্টর মিছিলে লোক ঢুকিয়ে দিয়ে কৃষকদের আন্দোলন নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল বিজেপি।
শুক্রবার কালীঘাটে দলের বৈঠকের পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে সৌগত বলেছেন, ”ওঁ যা করছেন সেটা নাটক। অমিত শাহের সভায় কোন কোন তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তা নিয়েও দল ভাবিত নয় বলে দাবি করেছেন প্রবীণ নেতা।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের রণকৌশল ঠিক করতে শুক্রবার কালীঘাটে বৈঠকে বসে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সৌগত রায় বিজেপিকে এ দিন একহাত নেন। দিল্লিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে কৃষক বিক্ষোভে হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপি লোক ঢুকিয়ে আন্দোলন নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিজেপির ঘনিষ্ঠ একজন এই কাজ করছে। সেটা প্রকাশ্যেও এসেছে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিন থেকেই কৃষকদের আন্দোলনের পক্ষে আছেন। ভবিষ্যতেও থাকবেন। বিজেপির অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টাকে নিন্দা করছি। বাংলার বিধানসভায় এই কালা আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে।
শুক্রবার বাজেট অধিবেশনে সংসদের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে কৃষি আইন নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সুখ্যাতি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন সৌগত। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ব্যাপারে অসম্মান না-করেই বলছি, যখন দেশজুড়ে কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন সংসদে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতির এই ক্লিশে আইনের পক্ষে বলা ঠিক হয়নি। সরকার এই আইন নিয়ে অনমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি এ দিন তাঁর ভাষণে বাংলার মনীষীদের কথা বলায় এটি নির্বাচনের আগে বাংলার মন ছোঁয়ার চেষ্টা কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সৌগত বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ভুল বলে বাংলাকে অপমান করে গিয়েছেন। কাজেই বঙ্গ সংস্কৃতি ও ভাষা ওঁরা বোঝেন না। কেনই বা সেই চেষ্টা করছেন?
সৌগত রায়ের কাছে এ দিন স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে বিদায়ী বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের প্রসঙ্গ। চাঁছাছোলা ভাষায় সৌগত বলেছেন, একদিকে রাজীব ইস্তফা দিচ্ছেন, আবার আর একদিকে মমতার ছবি নিয়ে ঘুরছেন। তিনি যেটা করছেন সেটা স্রেফ নাটক।
এ দিনের বৈঠকে কী রণকৌশল নেওয়া হল সে প্রসঙ্গে সৌগত জানান, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের সব নেতাকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় মানুষের কাছে পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাজেট পেশ এবং ৮ তারিখ বাজেট পাশ হবে। এই দুই দিন বিধানসভায় সব বিধায়ককে থাকতে হবে।
এছাড়া অধিবেশনে উপস্থিত থাকার থেকে মিছিল করা, জনসভা করার উপরই নেত্রী জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সৌগত রায়।
Be the first to comment