পরিবর্তনের অর্থ বিধায়ক, মন্ত্রী বা সরকারের পরিবর্তন নয় ৷ পরিবর্তনের অর্থ বাংলার সামগ্রিক পরিবর্তন, পিসি-ভাইপোর শাসনের পরিবর্তন, বেকরত্ব ও বোমাবাজির পরিবর্তন৷ বৃহস্পতিবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠ থেকে এই বার্তাই দিলেন অমিত শাহ ৷ এদিন রাজার শহর কোচবিহার থেকে উত্তরবঙ্গে বিজেপির রথযাত্রা তথা পরিবর্তনযাত্রার সূচনা করেন তিনি৷ সেই কর্মসূচির আগে সভামঞ্চ থেকে বাংলায় পদ্ম ফোটানোর ডাক দেন অমিত ৷ তাঁর বার্তা, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আমলে রাজ্য়ের শুধু অবনতিই হয়েছে ৷ এই অবক্ষয় থেকে বাঁচতে পরিবর্তনের পরিবর্তন দরকার ৷ সেই লক্ষ্য় নিয়েই রাজ্য়ে পরিবর্তন যাত্রা শুরু করেছে বিজেপি ৷
কোরোনা আবহের ঠিক আগেই এনআরসি ইশুতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ ৷ যার ছায়া পড়ে এ রাজ্য়েও ৷ এদিনের ভাষণে সরাসরি সেই প্রসঙ্গ না টানলেও অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে সরব হন অমিত৷ তাঁর প্রতিশ্রুতি, বাংলায় পদ্ম ফুটলে মানুষ তো দূরের কথা, একটা পাখিও অনুপ্রবেশ করতে পারবে না৷
পশ্চিমবঙ্গ বাঙালিপ্রধান রাজ্য হলেও এখানে অসংখ্য় সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠীর বাস৷ অঞ্চল ভেদে তাঁদের ভোট বড় ফ্য়াক্টর রাজনৈতিক দলগুলির কাছে৷ দক্ষিণে যেমন মতুয়াদের মতদানের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে, উত্তরে তেমনই দরকার কোচ ও রাজবংশীদের সমর্থন ৷ একথা বিলক্ষণ জানেন অমিত শাহ ৷ এদিন তাই কোচ, রাজবংশীদের উন্নয়নে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি৷ আধাসেনায় নারায়ণী ব্য়াটেলিয়ন তৈরির কথা বলে স্থানীয়দের আবেগ উথলে দেন অমিত৷ বুঝিয়ে দেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে ভোল বদলে যাবে উত্তরবঙ্গের৷
অমিত শাহের অভিযোগ, বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও উত্তরবঙ্গকে ঘিরে জাতীয়মানের কোনও পর্যটন ক্ষেত্র গড়ে ওঠেনি৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস, বিজেপি ক্ষমতায় এলে মদনমোহন মন্দির-সহ সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি নিয়ে নতুন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে৷ 250 কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হবে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তি ৷ রাজবংশী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জন্য খরচ করা হবে আরও ৫০০ কোটি টাকা ৷
এদিনের সভামঞ্চে উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের কথাও ভোলেননি অমিত ৷ তাঁর দাবি, চা শ্রমিকদের দুর্দশা ঘোচাতে সরাসরি ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্টে পারিশ্রমিক পাঠানোর ব্য়বস্থা করবে মোদী সরকার ৷ ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করে তাঁদের জন্য তৈরি হবে বাড়ি, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৷
পাশাপাশি, কৃষকদের প্রত্য়েকের অ্য়াকাউন্টে পৌঁছে যাবে নগদ ১৮ হাজার টাকা ৷ এরমধ্যে ১২ হাজার টাকা গত দু’বছরের৷ রাজ্যে পিএম কিষান সম্মাননিধি চালু হলে যা ইতিমধ্যেই পেয়ে যেতেন বাংলার কৃষকরা ৷ তবে এসবের জন্য অবশ্য়ই বাংলায় পদ্ম ফোটাতে হবে৷ কেন্দ্র ও রাজ্য়ে একই দলের সরকার থাকলে, একমাত্র তাহলেই পশ্চিমবঙ্গ সোনার বাংলা হয়ে উঠবে ৷
Be the first to comment