হরতালের দিন হাওড়ায় বামেদের ফুটবল খেলা

Spread the love

হরতালের সকালে পাওয়ার বল নিয়ে হাওড়ায় বনধ সমর্থকেরা রোডে প্রতীকী ফুটবল খেললেন। নরসিংহ দত্ত রোডের পাওয়ার হাউস মোড়ে এবং হাওড়া আমতা রোডের শানপুর মোড়ে বনধ সফল দাবি করে রাস্তায় ফুটবল খেলেন বাম কর্মী সমর্থকেরা। পরে পুলিশ এসে তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।

শুক্রবার সকাল থেকে বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে হাওড়ায়। সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত ধর্মঘটের তেমন কোনও প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। শহর হাওড়ায় সরকারি-বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি ও অন্যান্য যানবাহন চলছে। অফিসগুলিতেও হাজিরা প্রায় স্বাভাবিক। সমস্ত বাজারহাট, দোকানপাট খোলা রয়েছে। তবে এদিন হরতালের সমর্থনে বাম সমর্থকরা বেশ কিছু জায়গায় মিছিল করে। হাওড়া শানপুর এবং পাওয়ার হাউস মোড়ে বাম সর্মথকরা প্রতীকী ফুটবল খেলেন। শহরের রাস্তায় এদিন সকাল থেকে পুলিশের নজরদারিও রয়েছে চোখে পড়ার মতো।

হরতাল রুখতে সরকার তৃণমূল কংগ্রেস অনড়। উল্টোদিকে বিরোধী বাম ও কংগ্রেস হরতাল পালনে মরিয়া। দু পক্ষের টানটান টি-টোয়েন্টি ঘিরে ১২ ঘণ্টার হরতালের প্রভাব ইতিমধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে আসতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে শুক্রবার রাজ্যে ১২ ঘণ্টার হরতালকে সমর্থন জানিয়ে তীব্র রাজনৈতিক চাঞ্চল্য ফেলেছিলেন আব্বাস সিদ্দিকি। তাঁর দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের এটাই প্রথম রাজনৈতিক জোট প্রক্রিয়ার পদক্ষেপ। যদিও বাম কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির জোট এখনও সরাসরি ঘোষণা হয়নি।হরতালকে সমর্থন করে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির প্রবল সমালোচনা করেছেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা। তিনি বনেন, কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নেই বিজেপি ও তৃণমূলের।

শুক্রবার সকাল থেকেই হরতাল শুরু হয়। বিশেষ করে হাওড়া ও শিয়ালদহ মেন সহ বনগাঁ, কৃষ্ণনগর-রানাঘাট,ডায়মন্ডহারবার অন্যদিকে হুগলি শহরতলী এলাকার ট্রেন চলাচল বি়ঘ্নিত হচ্ছে বলেই খবর।

জঙ্গলমহলের পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম থেকে হরতাল পালনের খবর আসছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, সহ মুর্শিদাবাদ ও উত্তর বঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার থেকে এসেছে হরতালের খবর। দিন যত গড়াবে ততই হরতালের ছবি স্পষ্ট হবে। তবে হরতালে আব্বাস সিদ্দিকির সমর্থন আসায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়ে পরিস্থিতি বড়সড় হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

জোর করে দোকানপাট বন্ধ এবং গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানিয়েছে সরকার। সরকারি কর্মীরা অনুপস্থিত থাকলে বেতন কাটা যাবে। এমনও নির্দেশ এসেছে।

নবান্ন অভিযানে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ জানিয়ে বাম ও বাম সহযোগী দলগুলির পক্ষ থেকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বিবৃতি দেন। এতে বলা হয়েছে, ” বামপন্থী ছাত্রযুব সংগঠনগুলি এবং জাতীয় কংগ্রেসের ছাত্রযুব সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষার উন্নয়ন ও কাজের দাবিতে যে নবান্ন অভিযানের কর্মসূচী ছিল তাকে চারিদিক থেকে ঘিরে খানিকটা জালিয়ানওয়ালাবাগের মতো অবস্থা তৈরি করে তৃণমূল সরকারের পুলিশ বাহিনী যে নির্মম অত্যাচার নামিয়ে এনেছে তাতে দেড়শোর বেশি ছাত্রছাত্রী ও যুবক যুবতী আহত হয়েছেন। অনেকের আঘাত গুরুতর।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ইতিপূর্বে মাদ্রাসা শিক্ষক, পার্শ্বশিক্ষক, মহিলাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ওপরেও রাজ্যের পুলিশ অত্যাচার করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য বামফ্রন্ট ও বাম সহযোগী দলসমূহের পক্ষ থেকে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘন্টার রাজ্যব্যাপী হরতাল ধর্মঘটের আহবান জানানো হয়েছে।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*