বল জনজোয়ারে কামাল গাজী থেকে সোনারপুর “দিদির দূত” চলেছে। “দিদির দূত” নামটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা এই বাসটির নাম “দিদির দূত” আর বাসে দাঁড়িয়ে যিনি রোড শো করছেন, সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও “দিদির দূত”। উল্লেখযোগ্যভাবে এই “দিদির দূত” বাসটিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। এটাই শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোড শো-র আসল চমক।
এদিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষের এই রোড শো কামাল গাজী থেকে শুরু হয়ে সোনারপুর স্টেশন সংলগ্ন জায়গায় শেষ হয়। সেখানে ওই “দিদির দূত” বাসে দাঁড়িয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্য রাখেন। তিনি এদিন বলেন, “যত দিন যাচ্ছে ততই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর মানুষের আশীর্বাদ বাড়ছে। আমি কিছুদিন আগে কুলতলিতে সভা করতে গিয়েছিলাম। মনে হয় সেটাই ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় আমার দেখা সবচেয়ে বড় জনসমাবেশের সভা। কিন্তু আজ কুলপির সভার জনসমাবেশে আগের সভার রেকর্ড ভেঙেছে। তৃণমূল নিজেই রোজ নিজের রেকর্ড ভেঙে এগিয়ে চলেছে।”
সোনারপুরের সভা থেকে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির সমালোচনা করেন। উন্নয়ন, ধর্ম আর রাজনীতি মিশিয়ে ফেলা, দেশের বেকার সমস্যা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এই জায়গায় যারা দাঁড়িয়ে আছেন তাঁদের প্রশ্ন করছি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা কেউ পেয়েছেন?” জনতার পক্ষ থেকে উত্তর আসে না।
এরপর অভিষেক বলেন, “কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, কাস্ট সার্টিফিকেট সবাই পেয়েছেন?” আবার জনতার পক্ষ থেকে উত্তর আসে হ্যাঁ। অভিষেক এদিন বলেন, “২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি বলেছিল ক্ষমতায় এলে বছরে ২ কোটি মানুষকে চাকরি দেবে, দিয়েছে? বলেছিল সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে ফেলবে, ফেলেছে? দেশটাকে বহুজাতিকদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। কৃষকরা এমএসপি ( ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) পাচ্ছে না। আমি বলি এই এমএসপি- মানে মোদী-শাহ পার্টনারশিপ।”
এরপরই অভিষেক নির্বাচনের আসনের হিসাবে গিয়ে বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এবার ৩১টি বিধানসভার মধ্যে এ ৩১টিই চাই। আপনারা ২০১৬ ও ২০১৯ এ বিজেপির কথায় ভোলেননি। বিজেপির একজন বলছে এই জেলায় ৩১টিই তারা পাবে।” এর পর নাম না করে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা ও কলকাতা পুরসভার মেয়র ও বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, “বিজেপি এই জেলায় এমন একজনকে দায়িত্ব দিয়েছে যে নিজের পরিবারকেই দেখে না।”
সোনারপুরের সভায় উপস্থিত জনতা তখন করতালি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে “জিন্দাবাদ” ধ্বনি দেয়। এরপর অভিষেক বলেন, “এখনও তো খেলা শুরুই হয়নি। সবে তো ময়দানে নামছি। একটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রুখতে পুরো দেশ নেমে পড়েছে। যেখান থেকে ইচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনুক। তাতে কাজ হবে না। নেতা,মন্ত্রী কেনা যায়। মানুষের মন কেনা যায় না। আর এই মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন। গতবার পেয়েছিলাম ২১১ এবার ৩০ টা বাড়িয়ে দিন। এই নির্বাচন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন বহিরাগত বিতারণের নির্বাচন। সেটা মাথায় রেখে উৎসবের মেজাজে ভোট দিন।”
Be the first to comment