সাত লক্ষ মানুষের সমাগমে ঐতিহাসিক ব্রিগেড সমাবেশের শুরুটা হল অনেকের চোখে জল এনে। অসংখ্য লাল পতাকা তখন এসে মিলছে দশ দিক থেকে, ব্রিগেডে নিহত মইদুল ইসলাম মিদ্যার জন্য গান ধরলেন নীলাব্জ নিয়োগী, যে তরুণ টুম্পা সোনার প্যারোডি গেয়েছিলেন। জেন ওয়াইকে বলতে শোনা গেল, “মইদুল এ লড়াই একদিন জিতে নেবো ঠিক।”
সলিল চৌধুরীকে মনে করিয়ে দিলেন দেবোজ্যোতি মিশ্র, লাখো মানুষের সামনে গানে গানে বার্তা গেল, সারা পৃথিবী জুড়ে সবাই ভালো থাকুক। গানে গানে বার্তা দিলেন গণনাট্য সংঘের সাংস্কৃতিক কর্মীরাও।
দিন কয়েক আগেই মারা যান ডিওয়াইএফআই কর্মী মইদুল। ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানে যাওয়ার সময়ে পুলিশি লাঠিচার্জে আহত মইদুলকে বলতে শোনা গিয়েছিল-আমি আর বাঁচবুনি। তারপর হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান অভ্যন্তরীণ আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে মইদুলের। মইদুলের স্মৃতি এখনও বাম কর্মীদের মনে দগদগে। তার জন্যে লেখা গান বামেদের চোখে জল আনবে শুরুতেই, বলাই বাহুল্য।
অতীতে বাম-কংগ্রেস অর্থাৎ লাল ঝাণ্ডা আর তেরঙ্গা পতাকাকে একসঙ্গে দেখা যায়নি এই বঙ্গে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই ব্রিগেড চমকপ্রদ। থাকছে আব্বাস সিদ্দিকির সেক্যুলার ফ্রন্টও। বিমান বসু আগেই জানিয়েছেন, অন্তত সাত লক্ষ লোককে ব্রিগেডে দেখা যাবে। শুধু লোক জড়ো করাই নয়, বামেরা চাইছে তরুণ মুখকে দলে টানতে। সেই কারণেই অস্ত্র হয়ে উঠেছিল নাচ গান।
বামেরা প্রথম থেকেই গানটির সত্ত্ব অস্বীকার করেছে। তবে টুম্পা সোনা প্যারোডি জনপ্রিয় হয়েছিল হুহু করে। বেশ কিছু বিতর্ক তৈরি হলেও গানটিকে শেয়ার করেন সিপিএম-এর শীর্ষ নেতৃত্বও। সঙ্গে ছিল কলকাতার জায়গায় জায়গায় ফ্ল্যাশমব। নাট্য নির্দেশক জয়রাজ ভট্টাচার্যের লেখা, অর্ক মুখার্জীর গাওয়া গানে এই শহরের ২২ টি জায়গায় পারফর্ম করেন তরুণ তুর্কিরাই। উদ্দেশ্য একটাই মাঠে নতুন প্রজন্মকে টানা।
সংযুক্ত মোর্চার এই ব্রিগেড চাইছে একই সঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপির কাছে শক্তির বার্তা দিতে। পাশাপাশি বিরোধী ভোটকে একজোট করতে চাই কর্মীদের মনোবল ফেরানো। তাই আগের মতো দেওয়ালে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে,মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কঠিন সারগর্ভ বার্তা নয়, ব্রিগেডে বাজছে অন্য সুর।
Be the first to comment