বিধানসভা ভোটের একেবারে দোরগোড়ায় নদিয়া জেলায় তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন হতে চলেছে। টিকিট না পাওয়ার ‘ক্ষোভে’ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আরও এক পুরনো সঙ্গী নদিয়ার গৌরীশঙ্কর দত্ত এবার দল ছাড়ছেন। অন্য দলেও যে তিনি যোগ দেবেন সে কথাও মানছেন নদিয়া জেলার তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা বিধায়ক গৌরী দত্ত।
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ছিলেন তিনি। এমনিতেই জেলা কমিটির রাশ মহুয়া মৈত্রর হাতে আসার পর থেকেই কোণঠাসা হয়েছেন গৌরীশঙ্কর দত্ত। বার বার প্রকাশ্যে এসেছে তাঁদের দ্বন্দ্ব। তবে দলবিরোধী কথা তাঁর মুখে খুব একটা শোনা যেত না। এবার টিকিট না পাওয়ায় প্রকাশ্যেই ক্ষোভের কথা জানালেন তিনি। রাজ্যে পট পরিবর্তনের আগে থেকেই দীর্ঘদিন নদিয়ায় দলের রাশ ছিল তাঁরই হাতে।
তিনি বলেন, যে দলে ছিলাম, থাকব না। অন্য দলে যোগ দেব। আপাপত এইটুকু বলতে পারি। তবে কী কারণে এই সিদ্ধান্ত? তিনি বলেন, আমি অসম্মানিত হয়েছি। টিকিট দেওয়া হল না, ঠিক আছে, কিন্ত আমাকে জানানোর সৌজন্যটুকু করা হয়নি। দলকেও জানিয়েছি, আমি অসন্তুষ্ট।
গত লোকসভায় গেরুয়া ঝড়ে নদিয়া জেলাতেও তৃণমূল বেসামাল হয়েছে। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র হাতছাড়া হয়েছে শাসকদলের। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে জয় এলেও তিন বিধানসভা কেন্দ্রে পিছিয়ে তারা। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে জেলার ১৭টি বিধানসভার মধ্যে মাত্র ৬টিতে লিড নিতে পেরেছে শাসকদল। কল্যাণী ও হরিণঘাটা দুই বিধানসভা বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত। ওই দুই বিধানসভাতেও লিড নিয়েছে BJP।
লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে গৌরীশঙ্কর দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নদিয়াকে দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হয়। সেইসময় রানাঘাটের দায়িত্ব পেয়েছিলেন শঙ্কর সিংহ। কৃষ্ণনগরের দায়িত্ব দেওয়া হয় মহুয়াকে। সম্প্রতি আবার দুই জেলাকে মিলিয়ে সভাপতি করা হয় মহুয়াকে। এই সময় থেকেই পুরোপুরি কমতে থাকে গৌরী দত্তের প্রভাব।
গত নভেম্বর মাসে জেলা কমিটিতে গৌরী দত্তের প্রভাব পুরোপুরি কমে যায়। তৃণমূলের জেলা কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছিল, নদিয়া জেলার দীর্ঘদিনের বর্ষীয়াণ তৃণমূল নেতা গৌরীশঙ্কর দত্তকে। এমনকী তাঁর অনুগামীদেরও ব্লকের বিভিন্ন পদ থেকে সরানো হয়। এরপর থেকেই কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তবে বিতর্ক এরাতে তৃণমূলের সভা কম বেশি যেতেন তিনি। তবে এবার আর আপোষে রাজি নন তিনি। শোনা যাচ্ছে, BJP-তেই যাবেন তিনি। যদিও তা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।
Be the first to comment