একুশের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থীর নাম শুভেন্দু অধিকারী। গত ১৮ জানুয়ারি তেখালির মাঠে দাঁড়িয়ে মমতা যখন হঠাতই নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন, তারপর থেকেই শুভেন্দুর গলায় একটাই শব্দ, মাননীয়া, আপনাকে হারাবই, হারাবই, হারাবই। কিন্তু বুধবার মমতার নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন সন্ধেতে বিরুলিয়া বাজারে যে ঘটনা ঘটল, তারপর অনেকেই ভেবেছিলেন, এবার শুভেন্দু হয়তো চাপের রাজনীতি করতে পারেন।
কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হল না। বৃহস্পতিবার শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে নন্দীগ্রামের একাধিক মন্দিরে ঘুরলেও মমতার চোট পাওয়া ও চক্রান্ত তত্ত্বের পরিপ্রেক্ষিতে একটি শব্দও খরচ করলেন না শুভেন্দু। আর শুভেন্দুর এই নীরবতা রহস্যই এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বুধবারের ঘটনার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে তৃণমূল কর্মীরা। এদিন সকালে নন্দীগ্রামে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতিও শুরু হয়। এমনই উত্তপ্ত সময়ে সকাল ১১টা নাগাদ নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় বাবা ত্রিলোকেশ্বর মন্দিরে পুজো দেন শুভেন্দু। পরনে ছিল ধুতি, পাঞ্জাবি। পুজো দেওয়ার পরই বলে ওঠেন, ‘হর হর মহাদেব।’ শিবের মাথায় জলও ঢালেন তিনি।
এরপর যান পারুলবাড়ি শিব মন্দিরে। সেখানেও শিবের মাথায় জল ঢালেন। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, প্রায় প্রতি বছরই শিবরাত্রির দিন নন্দীগ্রামে যান শুভেন্দু। পুজো দেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আলাদা। দীর্ঘদিনের দলনেত্রীকে হারানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার পর যেভাবে কার্যত বিজেপির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, তখন কেন চুপ করে আছেন শুভেন্দু?
যদিও বিজেপির একটা অংশের দাবি, বিষয়টাকে গুরুত্বহীন করে দিতে চাইছে বিজেপি। তাই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের মতো নেতারা এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। সেই একই পন্থা নিয়েছেন শুভেন্দুও।
শুভেন্দু কিছু না বললেও মুখ খুলেছেন তাঁর বাবা তথা এখনও তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। আর নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। শিশিরের দাবি, ‘দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’। আহত মুখ্যমন্ত্রীর জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেও নাকচ করে দিয়েছেন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। ‘নিউজ ১৮ বাংলা’কে শিশির বলেন, ‘১০ মিনিটের মধ্যে গোটা ঘটনা বিস্তারিত জেনেছি। নন্দীগ্রামের মানুষ ষড়যন্ত্র জানে না। ধাক্কার অভিযোগ সাজানো হয়েছে।’
Be the first to comment