ইস্তেহার প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল আগেই। মুখমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে গিয়ে আহত হওয়ায় সেই দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে ‘ঐতিহাসিক’ ১৪ মার্চকে ইস্তেহার প্রকাশের জন্য বেছে নিল তৃণমূল। ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম দিবস হিসেবে উল্লেখযোগ্য। রাজ্যে পরিবর্তনের জন্য যেমন নন্দীগ্রামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তেমনই এবারের নির্বাচনেও এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে সেই নন্দীগ্রাম। তাই এই দিনটাকে ইস্তেহার প্রকাশের জন্য বেছে নেওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আপাতত হাসপাতালেই আছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাথ দ্রুত কাজে ফিরবেন বলে হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবারই বার্তা দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, শুক্রবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন তিনি। এ দিন মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। ছুটি পাওয়ার পর মমতা নিজের হাতেই ইস্তেহার প্রকাশ করবেন বলে জানা গিয়েছে।
১৪ মার্চ, রবিবার কালীঘাটে নিজের বাড়ি থেকে ইস্তেহার প্রকাশ করবেন তিনি। তাতে রাজ্যবাসীর জন্য কি বার্তা থাকে সে দিকে তাকিয়ে রয়েছে সব মহলই। ২০০৭-এর ১৪ মার্চে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই ব্যাখ্যা করা হয়। কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গোটা কার্যত গোটা দেশের নজরে চলে এসেছিল নন্দীগ্রাম। রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম জমানার পরিবর্তনের সূত্রপাত হয় সে দিনই। তৃণমূল সমর্থিত কৃষি জমি রক্ষা কমিটির সদস্যদের সাথে সিপিএম ক্যাডারদের ব্যাপক সংঘর্ষে নিহত হয় ৬ জন। ১৪ মার্চ বিশাল পুলিশ বাহিনী নন্দীগ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা বাধা দিলে নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। পুলিশের সঙ্গে সে দিন সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী ছিল বলেও অভিযোগ করে তৃণমূল। এই দিনটাকে নন্দীগ্রাম দিবস হিসেবে চিহ্নিত করে জোড়াফুল শিবির।
পরে ২০১৬ নির্বাচনে তেমন বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়নি তৃণমূলকে। তবে এবার লড়াইটা ততটা সহজ নয়। একের পর এক নেতা-বিধায়ক বিরোধী শিবিরে যোগ দিচ্ছেন, তাই এবার সেই নন্দীগ্রাম ফ্যাক্টরকে তৃণমূল কাজে লাগাতে চাইছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এক দিকে নন্দীগ্রাম থেকে মমতার প্রার্থী হওয়াই ভোটের আবহে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা বলে মনে করা হচ্ছে। আর ইস্তেহার প্রকাশের জন্য ১৪ মার্চকে বেছে নিয়ে তৃণমূল মনে করিয়ে দিল যে সত্যিই এবার নন্দীগ্রামই এপিসেন্টার।
Be the first to comment