ভোট ঘোষণার পর রবিবারই প্রথম রাজ্য সফরে এসেছেন অমিত শাহ। খড়গপুরের প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রোড শোতে ঐক্যবদ্ধ বিজেপির বার্তা দিয়েছেন তিনি। আর সোমবারই পাখির চোখ জঙ্গলমহলের দুই জেলায় সভা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। হেলিকপ্টার বিভ্রাটের জেরে ঝাড়গ্রামের সভায় পৌঁছতে না পেরে ভার্চুয়াল সভা করেছেন তিনি। আর বাঁকুড়ার রানিবাঁধে দেরি করে হলেও পৌঁছে গেলেন অমিত শাহ।
রানিবাঁধে ভোটপ্রচারে এসে আদিবাসীদের একাধিক প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন অমিত শাহ। মমতাকে কটাক্ষ করেছেন নন্দীগ্রামে পায়ে চোট লাগার ঘটনা নিয়েও। এদিন প্রথমেই মমতার ‘ষড়যন্ত্র’ তত্ত্বের প্রসঙ্গে টেনে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, ‘ঝাড়গ্রামে যাওয়ার সময় হেলিকপ্টার সত্যিই খারাপ হয়েছিল, আমি কিন্তু এটাকে কোনও ষড়যন্ত্র বলব না। হেলিকপ্টার মাঝে মাঝে খারাপ হয়ে যায়’।
এরপরই ফের একবার তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন শাহ। তাঁর দাবি, ‘গরিবের জন্য মোদীজি চাল পাঠান, সেই চাল তৃণমূল খেয়ে নেয়। আমফানের টাকা চুরি হয়েছে, দুর্নীতি বেড়েছে তৃণমূলের আমলে। কমিউনিস্টরা যাওয়ার পর ভেবেছিলাম রাজনৈতিক হিংসা কমবে। কিন্তু তৃণমূলের আমলে ১৩০ জন বিজেপি কর্মী মারা গিয়েছেন।
বিজেপি কর্মীদের মৃত্যুর প্রতিদান নেওয়ার বার্তা দিয়ে ফের একবার শাহের মুখে শোনা যায় মমতার পায়ে চোট লাগার প্রসঙ্গ। অমিত শাহ বলেছেন, ‘পায়ে চোট লেগে দিদি আহত হয়েছেন। আপনার পায়ে চোটে ব্যথা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, কোনও ষড়যন্ত্র নেই। এটা দুর্ঘটনা। আপনাকে প্রশ্ন করছি, যে ১৩০ জন বিজেপি কর্মীর রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মায়েদের ব্যথা বুঝতে পারেন?’
এর পরই বিজেপি সরকার গঠন করলে আদিবাসী এলাকার জন্য কী কী করতে চায় মোদির দল সেই খতিয়ান তুলে ধরেন অমিত শাহ। জনতাকে প্রশ্ন করেন, মোবাইলে কথা বলার সময় লাইনে সমস্যা নিয়ে, ফোন কেটে যাওয়া নিয়ে। অমিত শাহের প্রতিশ্রুতি, ‘একবার ভাজপা সরকার গঠন হয়ে গেলে এই এলাকায় মোবাইলের টাওয়ারের জাল বিছিয়ে দেব।’ জঙ্গলমহলে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানেও বিজেপি বদ্ধপরিকর বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এদিন তৃণমূল সরকারকে বারংবার নিশানা করে অমিতের দাবি, ‘১০ বছর ধরে রাজ্যে কাটমানির সংস্কৃতি চলছে। পশ্চিমবঙ্গে এখনও অনুপ্রবেশ ও কয়লাচুরি হচ্ছে। বিজেপি সরকার হলেই আদিবাসীরা বন্য অধিকার আইনের সুবিধা পাবেন। প্রতিটি ঘরে পানীয় জলের সমস্যা মিটবে। সপ্তম বেতন কমিশনের মান পাবেন রাজ্যবাসী। ঝাড়গ্রামে আদিবাসী স্মৃতি সংগ্রহশালা তৈরি হবে। একলব্য মডেল স্কুল তৈরি হবে। রেললাইন, মন্দির সংস্কারের ক্ষেত্রে আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করবে বিজেপি।’
Be the first to comment