নবান্ন দখলের মহারণে মুখোমুখি এখন দুই দল তৃণমূল ও বিজেপি। তবে এবারের নির্বাচনে নিজের ভাঙা পা’কেই বাজি ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মেজিয়ার জনসভা মঞ্চে হুইল চেয়ারে বসেই বিজেপিকে তুলোধনা করেন তৃণমূলনেত্রী। একইসঙ্গে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে নিজেকে ‘আহত বাঘিনির’ সঙ্গে তুলনাও করলেন মমতা।
বলেন, আমার লড়াই চলছে। এই ভোট একটা খেলা। আমি এক পায়ে এমন খেলা খেলব, জনগণের সাপোর্ট নিয়ে খেলব। আমার মা-বোনেদের দুই পা, আমি ওদের সাপোর্টে খেলব। খেলাও হবে, জেতাও হবে। এই যুদ্ধে বাংলা জিতবে, দিল্লি হারবে। সবাইকে ভয় দেখিয়ে থামানো গেলেও আমায় পারবে না। একইসঙ্গে বিজেপির ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে সুর চড়াতে গিয়ে তুলে এনেছেন তাঁর ভাইপোর পৈতের সময় আস্থাভাজন ফিরহাদ হাকিমের মুখ দেখার প্রসঙ্গও।
মঙ্গলবার দিনভর প্রচারে ঝড় তুলতে আসরে নামছে শাসক-বিরোধী দলের হেভিওয়েট নেতৃত্বরা। কে নেই সেই তালিকায়! রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় থেকে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা জে পি নাড্ডা, রাজনাথ সিং, আদিত্যনাথ যোগী সকলেই প্রচার সারছেন মঙ্গলবার। জঙ্গলমহল জুড়ে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁদের।
এদিন দলের গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতেও কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, ‘আমার কর্মীরাই আমার সম্পদ। আগে যদি ২৪ ঘণ্টায় ১২ ঘণ্টা কাজ ১৮ ঘন্টা কাজ করুন। এই লড়াই জিততেই হবে।’ এদিন বাঁকুড়ার মেজিয়া, ছাতনা, রাইপুরে জনসভা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই রাইপুরেই মমতার আগে সভা করছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য়নাথ।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতার কর্মসূচির ধার কমাতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সভা-সমাবেশের কাছাকাছিই জাতীয় স্তরের নেতাদের দিয়ে একই সময়ে সভা করাচ্ছে বিজেপি। যদিও এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে নিজের পরিবারের প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, আমার ভাইপোর পৈতের সময় মুখ দেখেছে ফিরহাদ। আমার ভাইয়ের বউ তফশিলী। এটাই আমার পরিবার। আমি একটি বাউল মেয়ের সঙ্গে থাকি।
তবে, ভোটের শুরুর পর্ব থেকেই বাংলার সব আসনে নিজেকেই ‘মুখ’ করছেন মমতা। এদিনও নিজেকে আর নিজের শারীরিক অবস্থাকেও জনগনের সামনে তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘আমার পায়ে চোট থাকার জন্যে আমি দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে পারছি না। যার জন্যে আমি ক্ষমা চাইছি। আমি রোজ ২৫-৩০ কিমি হাঁটি। আমার সাথে উন্নয়নও হাঁটে। পায়ের চোটের যন্ত্রণা যারা জানে তারাই বুঝতে পারছেন। আমাকে চিকিৎসকরা বারণ করেছিলেন রিস্ক নিতে। আমি সকলের সহযোগিতায় বেরিয়েছি। আমি ঘরে থাকলে বিজেপি যে যন্ত্রণা দেবে মানুষক, তা থেকে বাঁচাতেই আমি বেরিয়েছি।’
Be the first to comment