পায়ে প্লাস্টার করা অবস্থায় হুইলচেয়ারে বসে প্রচার করতে কতটা সমস্যা হচ্ছে, সোমবার পুরুলিয়ার সভা থেকে তা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মঙ্গলবার বাঁকুড়ার দুই সভা থেকেই তৃণমূলনেত্রী দাবি করলেন, জীবনে অনেকবার আঘাত পেয়েছেন কিন্তু এবার পায়ে চোট লেগেই লেগেই সবথেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন তিনি ৷ প্রত্যয়ী মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য একই সঙ্গে বলেছেন, ‘আঘাত আমার কাছে হেরে যাবে, আমি আঘাতের কাছে হারব না ৷
এদিন প্রথমে বাঁকুড়ার শালতোড়ায় সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই সভার শুরুতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পায়ে চোট থাকার জন্য দাঁড়াতে পারছি না এবং দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখতে পারছি না৷ এর জন্য আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ৷ আমি প্রতিদিন ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটি ৷ আমার সঙ্গে উন্নয়ন হাঁটে, আমার মাথাও হাঁটে, হৃদয়ও হাঁটে৷ এর আগে আমার মাথায়, হাতে, কোমরে, চোখে আঘাত পেয়েছি ৷ সে সব আঘাত সহ্য করে নিয়েছি ৷ কিন্তু মানুষের পায়ে যদি আঘাত লাগে আর মানুষ দাঁড়াতে না পারলে তাঁর যে কতটা যন্ত্রণা, যাঁদের পায়ের চোট লেগেছে একমাত্র তাঁরাই জানেন ৷ আমার কোনও উপায় নেই, প্রশাসন, সংবাদমাধ্যম, স্থানীয় কর্মী, সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় এই কারণেই বেরিয়েছি যে ঘরে পায়ের যন্ত্রণায় শুয়ে থাকলে বিজেপি মানুষকে যে যন্ত্রণা দেবে আর সেই যন্ত্রণা থেকে মানুষকে উদ্ধার করা যাবে না ৷ তাই আমি মনে করি নিজে যন্ত্রণা পেলেও মানুষের যন্ত্রণা কমানোই সবথেকে বেশি জরুরি ৷
এরপর ছাতনার সভা থেকেও মুখ্যমন্ত্রী পায়ে ব্যথার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার পায়ে সত্যিই খুব যন্ত্রণা হচ্ছে ৷ মানুষের পায়ের যেটা সবথেকে মোটা হাড় সেটাতেই আঘাত লেগেছে আর সেখানে রক্তও জমাট বেঁধে আছে ৷ আমাকে খুব কষ্ট করে আসতে হচ্ছে ৷ আমি না এলে বিজেপির হার্মাদরা বাংলাটাকে শেষ করে দেবে ৷ বাংলার মানুষকে বাঁচাতেই আমাকে আপনাদের কাছে ছুটে আসতে হয়েছে ৷ একসময় আমার মাথায় মারা হয়েছিল, মাথায় অপারেশন হয়েছে, গোটা মাথা জুড়ে সেলাই আছে ৷ দু’ হাতে অপারেশন হয়েছে, দু’ হাতেও মারা হয়েছিল ৷ কোমরে চোট আছে, কোমরে বেল্ট পরি ৷ পেটেও দু’ তিনবার অপারেশন হয়েছে ৷ মার খেতে খেতে, আঘাতকে জয় করতে করতে আমি এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি ৷ যতদিন বাঁচব আঘাত আমার কাছে হেরে যাবে, আমি আঘাতের কাছে হারব না ৷ বাংলা মাকে রক্ষা করার জন্য এই কষ্ট ৷
গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে পায়ে আঘাত পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এরপর এসএসকেএম হাসপাতালে দু’ দিন ভর্তি ছিলেন তিনি ৷ চিকিৎসকরা তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তা শুনতে চাননি তৃণমূলনেত্রী ৷
Be the first to comment