ভোটের মুখে রাজ্যে মনোনিবেশ করলেও জাতীয় রাজনীতি নিয়েও চিন্তাশীল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ৷ সংসদে দিল্লি নিয়ে একটি বিল পেশ করাকে ঘিরে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি ৷
এ ব্যাপারে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চিঠি দিয়ে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ তাঁর কথায়, লেফটেন্যান্ট গভর্নরের ক্ষমতা বাড়াতে বিল আনার পদক্ষেপ ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর উপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সামিল ৷ এই নিয়ে অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলিকে একজোট হওয়ারও ডাক দিয়েছেন মমতা ৷
গত সোমবার লোকসভায় ন্য়াশনাল ক্যাপিটাল টেরিটোরি অফ দিল্লি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, 2021 পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি ৷ ওই বিলে বলা হয়েছে, বিধানসভায় তৈরি হওয়া কোনও আইনের ক্ষেত্রে সরকার মানে সেখানে লেফটেন্যান্ট গভর্নরকেও বোঝাবে ৷ দিল্লি সরকার কোনও প্রশাসনিক পদক্ষেপ করার আগে এলজি-র অনুমতি নেওয়াটাও বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব রয়েছে এই বিলে ৷
এরই প্রেক্ষিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে মমতা চিঠি লিখে জানিয়েছেন, “দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে এলজি-র নীচে স্থান দেওয়া ও দিল্লি সরকারের ক্ষমতা হ্রাস করার এই অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করছি ৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, সংবিধান ও গণতন্ত্রের প্রতি বিজেপির হামলার বিরুদ্ধে লড়াই করতে আমাদের একজোট হওয়ার সময় এসে গিয়েছে ৷ রাজ্য সরকারগুলির ক্ষমতা খর্ব করে সেগুলিকে পৌরসভায় পরিণত করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷”
মমতার কথায়, “লোকসভায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে যে ন্য়াশনাল ক্যাপিটাল টেরিটোরি অফ দিল্লি (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২১ পেশ করেছে, ভারতীয় সাধারণতন্ত্রের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর উপর একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ৷” রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারের ব্যস্ততা না-থাকলে এ ব্যাপারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে তিনি দিল্লি যেতেন বলেও চিঠিতে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একহাত নিয়ে মমতা লিখেছেন, “এটা সবার কাছে প্রমাণ হয়ে গেল যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০১৪ ও ২০১৯ বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির কাছে বিজেপির লজ্জাজনক হার হজম করতে পারেননি ৷ তাই তাঁরা প্রক্সি হিসেবে সরকার চালাতে চান ৷ এই আইন আনার প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য সেটাই ৷”
কেন্দ্র দিল্লির সঙ্গে যেটা করছে, সেটাই অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গেও করতে চাইছে বলে অভিযোগ করে মমতা লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যপালরা নিরপেক্ষ সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ না-করে বিজেপির কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন ৷”
এই চিঠির মাধ্যমে ফের জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একজোট করার জন্য সচেষ্ট হলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর প্রতিও নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন তেজস্বী যাদব, অখিলেশ যাদবের মতো ভিন রাজ্যের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ৷
Be the first to comment