একদিনে তিন সভা-হুইল চেয়ারে বসে থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৈনন্দিন রুটিন এখন এমনই। নবান্ন দখলে রাখতে ‘অসুস্থ’ শরীরেও বাংলার নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। বুধবার বাঁকুড়ায় তিনটি সভা করছেন মমতা। আর প্রতিটাতেই তাঁর নিশানায় নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ সহ বিজেপি নেতারা।
কিন্তু গত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় তৃণমূলকে কার্যত ধুয়ে দিয়েছে বিজেপি। তার নেপথ্যে যতটা ছিল মোদী ‘হাওয়া’, ততটাই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। এবারও এই সেদিন পর্যন্তও শম্পা দরিপাদের বিক্ষোভ, দল ছাড়ার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এদিন মমতা বাঁকুড়ার দলীয় প্রার্থী, অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে সামনে দাঁড় করিয়ে বললেন, ‘সায়ন্তিকা আমার খুব প্রিয় প্রার্থী। ও খুব ভালো মেয়ে।’
এখানেই থামেননি তৃণমূল নেত্রী, সায়ন্তিকার পারিবারিক দিকটিও প্রকাশ্য সভায় তুলে ধরেছেন মমতা। বলেছেন, ‘ও কিন্তু যে সে নয়, পুলিশ পরিবারের মেয়ে। ওঁর বাবা পুলিশে চাকরি করত। এখনও খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। ওকে ভোট দিলে ভুল করবেন না। সেই ভোট আসলে আমার জন্য ভোট।’ তবে, সায়ন্তিকার ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি দলের কোন্দল ঢাকতেও ‘বিদ্রোহীদের’ বার্তা দিয়েছেন দলনেত্রী।
বিক্ষুব্দ শম্পা দরিপার নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শম্পা খুব ভালো। এবার ওঁকে প্রার্থী করিনি ঠিকই। তবে, দল ওঁকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগাবে। আমার দলে কর্মীরাই সম্পদ। কেউ ভুল বুঝবেন না। আমরা আমাদের কর্মীদের নিয়ে চলি। অন্য কোনও দল তা করে না।’ দিনকয়েক আগেই প্রার্থী হতে না পেরে বিজেপিতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শম্পা ও তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু সেই বিদ্রোহ আপাতত মিটেছে। আর ভোটের ঠিক মুখে বিজেপিকে রুখতে বিদ্রোহীদেরও কাছে টেনে নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দেওয়ারই চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও এদিন রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষাতেই বিজেপিকে আক্রমণ শানান তৃণমূল নেত্রী। বিজেপিকে রুখতে মমতা বলেন, ‘বিজেপি জিতে গিয়ে মাথার ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে। আমার পা’টাতেও চোট করে দিয়েছে, কিন্তু মনে রাখবেন, আমি ভাঙি তাও মচকাই না। মহিলাদের বলব, একটু হাতা-খুন্তি ঘোরান। বিজেপি এখন বাসে করে লোক নিয়ে আসছে, বলছে গ্রাম দখল কর। ঝাড়ু, হাতা, খুন্তি নিয়ে তৈরি থাকুন। দখল করতে এলে থাপ্পড় মারুন, তাড়ান এইসব বহিরাগতদের।’
Be the first to comment