১০ মার্চ আহত হয়েছিলেন। ১৮ দিন পর দোলপূর্ণিমার সন্ধ্যায় তিনি আজ আবার নন্দীগ্রামে। রেয়াপাড়া শিব মন্দিরে (এখানেই বাড়িভাড়া নিয়েছেন) প্রথম সভা থেকেই পরিষ্কার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন তিনি নন্দীগ্রামের প্রার্থী। নাম না করেই শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্কে রইল বাছাই বিশেষণ, ভোট ভাগের রাজনীতিকে তুলে ধরে বিঁধলেন স্বকীয় ভঙ্গিমায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “নন্দীগ্রামের মানুষের যে লড়াই তাকে সম্মান জানানো কর্তব্য আমার । তাই নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছি। এক কথায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তাঁ যুক্তি এই সিদ্ধান্তে জনসমর্থন ছিল তা তিনি পরখ করেই নিয়েছেন। মমতার কথায়, “এখানকার ছেলেরা দুহাত তুলে নাচতে শুরু করে আমি দাঁড়াব শুনেই।”
বিরোধীরা বলছে মমতার নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ভবানীপুরের পায়ের তলায় মাটি আলগা বলে। মমতা ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন সেই তত্ত্ব। বললেন, “ভবানীপুরের মানুষ আপনজন। রোজ দেখা হয় তাঁদের সঙ্গে। সেখানে দাঁড়ালেও ৫০ হাজার ভোটে জিততাম। বাংলার যেখান থেকে ইচ্ছে দাঁড়াতে পারি। আমি নন্দীগ্রামকে প্রণাম-সেলাম করার জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি।”
কিন্তু শুভেন্দু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার। একদিকে যখন তৃণমূল বহিরাগত অস্ত্রে শান দিয়ে গিয়েছে, তখন শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বহিরাগত দেগে দিয়েছেন। মমতার উত্তর, “আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, আমাকে বহিরাগত বলছে, লজ্জা করে না গুণ্ডাদের!”
শুভেন্দু অধিকারী প্রথম থেকেই বলে আসছেন মমতার ভরসা সংখ্যালঘু ভোট। পাশাপাশি তিনি খোলাখুলিই হিন্দু ভোট একজোট করতে নেমে পড়েছেন। মমতা বিষয়টিকে তুলে আনলেন রেওয়াপাড়ার প্রথম সভা থেকে। নাম না করে বললেন, “আজ হিন্দু মুসলমান করছে। তুমি দুনম্বরি। কাল টুপি পরেছিলে, আজ গেরুয়া পরেছো। নন্দীগ্রামবাসীকে ঐক্যের বার্তা দিয়ে মমতা বলছেন, আরেকবার আন্দোলন হলে একজন আরেকজনকে বাদ দিয়ে হবে?”
ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হয়েছে যে নন্দীগ্রামের অনেক জায়গায় বহিরাগতদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে। সরাসরি নাম নেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। মমতা সেই প্রসঙ্গটিও টানলেন। বললেন “নন্দীগ্রামে অনেক জায়গায় বিহারের গুন্ডাদের লুকিয়ে রেখেছে। পুলিশের ড্রেস পরে ভয় দেখাবে। আপনা একমাস ধরে লড়েছেন আপনাদের ভয় দেখাবে?”
উল্লেখ্য এদিন মমতার সভা শুরু হয় কীর্তনশিল্পী অদিতি মুন্সীর গানে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, নিছক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নয়, শেষবেলায় এই এই পরিকল্পনাও ভোট ভাগ রুখতেই।
Be the first to comment