নন্দীগ্রামে শেষবেলার প্রচারে প্রাক্তন সৈনিক মুকুল রায়ের রীতিমতো প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মুকুল রায়ের তুলনা টেনে তৃণমূল সুপ্রিমো বললেন, ‘মুকুল শুভেন্দুর মতো এত খারাপ নয়।’ এতেই শেষ নয়, মুকুল রায়কে কৃষ্ণনগর উত্তরে BJP-র টিকিট দেওয়া নিয়েও এদিন মুখ খুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘মুকুল বেচারা থাকে কাঁচরাপাড়ায়। ব্যারাকপুর, জগদ্দলস ভাটপাড়া, এসব এলাকায় না দিয়ে ওকে পাঠিয়েছে কৃষ্ণনগরে।’
ভোটের বাংলায় তৃণমূলের একদা সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুলের নাম করে যেভাবে সরব হলেন মমতা, তা রাজনৈতিক দিক থেকে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে BJP-তে যাওয়া শুভেন্দু ও মুকুলের যেভাবে তুলনা টেনে মুকুলকে সার্টিফিকেট দিলেন মমতা, তা রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের নভেম্বরে মুকুল রায়ের তৃণমূল ত্যাগ শোরগোল ফেলে দিয়েছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। এরপর মুকুলের হাত ধরে একাধিক তৃণমূল নেতারা পদ্মশিবিরে নাম লেখাতে শুরু করলেন।২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে BJP তে যোগ দেন অর্জুন সিং, সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরারা। মুকুলের হাত ধরেই এই দলবদল বলে ব্যাখ্যা রাজনীতির কারবারিদের একাংশের।
উনিশের নির্বাচনে বাংলায় ১৮ আসনে পদ্মফুল ফুটিয়ে BJP-র অভাবনীয় উত্থানে রীতিমতো ‘ধাক্কা’ খায় শাসক শিবির। ‘চাণক্যে’র বাজিমাতেই BJP-র এহেন ‘বড় জয়’ বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে মুকুল রায়কে নিয়ে মমতার এদিনের মন্তব্য নয়া মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ।
অন্যদিকে, BJP-তে প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের ছবি সামনে এসেছে। এই আঙ্গিককে সামনে রেখে এদিন মমতা বলেছেন, ‘যারা BJP করেছে, তাদের কাউকে টিকিট দেয়নি। সায়ন্তন আমায় গালিগালাজ করত, তাকে দেয়নি, জয়প্রকাশকেও দেয়নি। CPIM-এর হার্মাদ, তৃণমূলের গদ্দারদের টিকিট দিয়েছে। সব ধার করা লোককে টিকট দিয়েছে… তৃণমূলকে ভাঙতে গিয়ে নিজের দলটাকেই ভেঙে দিলেন।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই মন্তব্য করে আদতে BJP-র অন্দরে যেন রেষারেষি তৈরি করে দিতে চাইলেন তৃণমূলনেত্রী।
Be the first to comment