বঙ্গ রাজনীতির হটস্পট এখন নন্দীগ্রাম। রাত পোহানোর অপেক্ষা, তারপরই মহারণের পরীক্ষায় নামবেন যুযুধান দুই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারের শেষপর্বে এসে রীতিমতো ঘাঁটি গেড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শেষ বেশ কয়েকদিন শুভেন্দু অধিকারী কার্যত নন্দীগ্রাম-বন্দি! কিন্তু নিজেকে নন্দীগ্রামের ‘ঘরের ছেলে’ বলে দাবি করা শুভেন্দুকে নন্দীগ্রামেই বারবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই বিক্ষোভ ছিল মহিলাদের। কখনও হাতে ঝাঁটা-লাঠি নিয়ে, আবার কখনও বা কালো পতাকা নিয়ে শুভেন্দুকে সেইসব বিক্ষোভ বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে তাঁর।
আর সেই সূত্রেই এবার শুভেন্দুর নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে অভিনব মহিলা-সুরক্ষা বলয় তৈরি হল শুভেন্দুর জন্য। গত নভেম্বরের শেষে মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগের পরই মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া রাজ্য সরকারের ‘জেড প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ছেড়ে দেন শুভেন্দু। আর বিজেপিতে যোগ দেওয়া মাত্রই তাঁকে ‘জেড’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। মেলে বুলেট প্রুফ গাড়িও। কিন্তু তাতেও বারবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে শুভেন্দুকে। আর ভোটের মাঝ মরসুমে তাই শুভেন্দুর নিরাপত্তা বলয়ে যুক্ত করা হল ১৫ জন মহিলা সিআরপিএফ-কে অর্থাৎ, মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়লে তাঁরাই এগিয়ে যাবেন শুভেন্দুকে ‘গার্ড’ করতে।
বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহকে ‘বড় দাদা’ বলে সম্বোধন করেছেন৷ ছোট ভাই শুভেন্দু অধিকারীকে নন্দীগ্রাম থেকে জেতাতে তাই প্রচারের শেষ দিনে পৌঁছে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ নিরাপত্তার কড়াকড়ি ভেঙে দিয়ে নন্দীগ্রামের রাস্তায় দাঁড়ানো মানুষের মধ্যে ভিড়ে মিশে যেতেও দ্বিধা বোধ করেননি অমিত শাহ৷ আবার শুভেন্দুকে জেতানোর প্রার্থনা নিয়ে স্থানীয় শিবমন্দিরে গিয়ে পুজোও দেন তিনি৷ শুভেন্দুকে দলে টানার পর তাঁকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে বিজেপি। বাকি তৃণমূলত্যাগী নেতাদের তুলনায় শুভেন্দু যে আলাদা, তা তাঁর নিরাপত্তার বহরেও স্পষ্ট।
সেই সূত্রেই ফের অমিত শাহের মন্ত্রক থেকেই শুভেন্দুর নিরাপত্তায় ১৫ মহিলা সিআরপিএফ যোগ করা হল। ভোটের দিন নন্দীগ্রামে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের ৩৫৫ বুথকেই স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে শুভেন্দুর নিরাপত্তা বাড়ানো বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Be the first to comment