অশোকের হাত ঘুরে কোটি কোটি টাকা জমা পড়তো অভিষেকের স্ত্রী-শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট ইডির

Spread the love

কয়লা-কাণ্ড নিয়ে গোয়েন্দারা তল্লাশি চালাচ্ছেন গত কয়েক মাস ধরেই। উঠে আসছে একের পর এক তথ্য। এবার আদালতে এই মামলার তদন্তে উঠে আসা বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ফের একবার সামনে এল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। পুলিশ আধিকারিকের কাছে কীভাবে কোটি কোটি টাকা যেত, সেই তথ্যও জানানো হয়েছে। দিল্লিতে ইডি আদালতে এই সংক্রান্ত নথি জমা দিয়েছেন গোয়েন্দারা।

বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে এই মামলার বেশ কিছু তথ্য পেশ করেন ইডি আধিকারিকরা। সেখানে বলা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের আধিকারিক অশোক মিশ্রের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে কয়লা পাচারের ১৬৮ কোটি টাকা। আর সেটাই গিয়েছে খুব কম সময়সীমার মধ্যে। ইডির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সদ্য গ্রেফতার হওয়া বাঁকুড়ার আইসি অশোক মিশ্র নিয়েছেন ১৬৮ কোটি টাকা। আরও নিখুঁত হিসেব কষলে দেখা যাব, ১০৯ দিনে ১৬৮ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে তাঁকে।

প্রসঙ্গত, দিন চারেক আগেই অশোক মিশ্রকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই প্রথম এই মামলায় কোনও পুলিশকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। বার তিনেক জেরা করার পর অশোক মিশ্রকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। কয়লা পাচারের মোটা টাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের হাতে তুলে দিতেন এই অশোক মিশ্র। এমন রিপোর্ট ছিল গোয়েন্দাদের হাতে। আর তার ভিত্তিতেই তাঁকে জেরা করা হয়। তাঁকে যে টাকা দেওয়া হত, তার রসিদও পাওয়া গিয়েছে। নিজে সই করে ওই টাকা নিতেন তিনি। সেই রসিদও আদালতে পেশ করেছে ইডি। এগুলো প্রোটেকশন মানির টাকা বলেই দাবি করেছেন গোয়েন্দারা।

চলতি বছরের ১৮ মার্চ কয়লা-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার এক সহযোগীর গোপন জবানবন্দি নেন গোয়েন্দারা। সেই জেরায় ওই সহযোগী জানিয়েছিল, অশোক মিশ্রের কাছে যে টাকা আসত, তার একটা বড় অংশ তৃণমূলের যুব নেতা বিনয় মিশ্রের নির্দেশে যেত দিল্লিতে। সেখান থেকে হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা থাইল্যান্ড ও লন্ডনের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত। আর থাইল্যান্ডের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সাংসদ অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ পাওয়া গিয়েছে ও লন্ডনে অ্যাকাউন্ট রয়েছে অভিষেকের শালীর। সুতরাং কয়লা-কাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই প্রভাবশালীদের নাম সামনে আসার সম্ভাবনা বাড়ছে।

এ দিকে বৃহস্পতিবারই পঞ্চমবারের জন্য লালাকে তলব করেছে সিবিআই। সঙ্গে ডাকা হয়েছে তাঁর সঙ্গী গুরুপদ মাজিকেও তলব করা হয়েছে। ব্যবসার সঙ্গী না পার্টনারদের মিখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, অবৈধ কয়লা পাচারের ব্যবসায় একইসঙ্গে টাকা খাটাতেন এই দুজন। তাই কীভাবে কোন পথে সেই টাকা খাটানো হত, সেটাই জানার চেষ্টা করবে সিবিআই। তবে রক্ষাকবচ থাকায় আখনও লালাকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*