শীতলকুচির ঘটনাকে এবার ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘কোচবিহারের ঘটনায় মৃতদের সকলেরই গলায় বা বুকে গুলি লেগেছে। কারও পায়ে গুলি লাগেনি। তাহলে সরাসরি বুকেই গুলিটা করা হয়েছিল খুনের জন্য? স্প্রে করে গুলি করা হয়েছে। কেন?’
রবিবার শিলিগুড়ি থেকেই ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দু’টি পরিবারকে আশ্বস্ত করে সমস্ত দায়িত্ব নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এটা আমার জেদ। আমি যদি মনে করি কিছু করব, তাহলে আমি করবই। আমাকে আটকানো যাবে না। এভাবে তো আটকানো যাবেই না। ওঁরা হয়ত আমাকে যেতে দেয়নি। কিন্তু আজকের যুগে কী কাউকে আটকানো যায়? আমি আমার কথা রেখেছি। দুটো পরিবারের সঙ্গে কথা হল। আমি যদি গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতাম কী অসুবিধা ছিল? দুর্দিনে তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে কী ক্ষতি হত? ৪৫ দিন কিংবা তিন বছরের শিশুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলে কী ক্ষতি হতো? মৃতের গর্ভবতী স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে আশ্বস্ত করলে কী ক্ষতি হতো?’
এদিন সরাসরি কমিশনকে তোপ দেগে মমতা আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র আমাকে আটকানোর জন্য নয়া আইন করা হয়েছে। মাথায় রাখবেন, এভাবে আমাকে আটকানো যায় না।’ এদিন বিজেপিকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘কমিশনের মডেল কোড ওফ কন্ডাক্ট এখন বিজেপি কোড ওফ কন্ডাক্টে পরিনত হয়েছে। আমি কিন্তু বিজেপি কোড ওফ কন্ডাক্ট না ভেঙেই কথা বললাম মৃতদের পরিবারের সঙ্গে।’
তিনি এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৪ এপ্রিল কোচবিহারের শীতলকুচিতে যাবেন তিনি। পুলিশকেও ভর্ৎসনা করতে ছাড়েননি মমতা, ‘পুলিশ ক্লিন চিট দিচ্ছে। তাই তাঁদের উপর ভরসা করা যায় না। SP-কে তো কে BJP নিয়োগ করেছে।’ তিনি এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘CISF পাবলিক সামলানোর জন্য নয়। তাঁরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা সামলানোর জন্য। তাহলে তাঁরা নিরাপত্তার দায়িত্বে কেন?’
একটি ছবি দেখিয়ে মমতা আরও বলেন, ‘কীভাবে খুন করা হল দেখুন। ছবিগুলো আমি দেখতে পারছি না, এতটা কষ্ট হচ্ছে। এই রকম অত্যাচার মেনে নেওয়া যায় না। খুবই অন্যায় হয়েছে। গরীব পরিবারের উপর যত অত্যাচার হয়। যাতে ঘটনার বিচার হয়, সেদিকে নজর রাখব, মমতা।’ তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতীম রায়কে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে FIR রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। এদিন আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মোমবাতি মিছিলের ডাক দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
পাশাপাশি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি আজ প্রতিবাদের জন্য সকাল থেকে কালো পড়েছি। আলিপুরদুয়ার থেকে মোমবাতি নিয়ে হাঁটব। অমিত শাহের পদত্যাগের দাবিতে। ২-৪টে ব্লকে ব্লকে মোমবাতি মিছিল করুন আপনারা। মৃতদের পরিবারকে সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে তিনি সাহায্য করবেন এ কথাও জানিয়েছেন মমতা। ‘মানুষ বিজেপির প্রতি বীতশ্রদ্ধ। মানুষ আমাকেই ভোট দেবে। শান্তি বজায় রেখে ভোট হোক। মানুষ যেন ভোট দিতে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে’, বলেন তিনি।
Be the first to comment