রেলের অন্দরমহলে থাবা বসিয়েছে করোনা। আক্রান্ত বহু রেলকর্মী। সূত্রের খবর, শুধুমাত্র শিয়ালদা ডিভিশনেই করোনায় আক্রান্ত প্রায় ৭৫০ জন রেলকর্মী। এই পরিস্থিতিতে শিয়ালদা সেকশনে মোট ৫৪ জোড়া লোকাল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে চরম নাজেহাল পোহাতে হতে পারে নিত্যযাত্রীদের।
শুধু লোকাল ট্রেন নয়, বাতিল হয়েছে একগুচ্ছ স্পেশাল ট্রেনও। ৪ তারিখ থেকে বাতিল হওয়া স্পেশাল ট্রেনগুলি যথাক্রমে আপ এবং ডাউন হাওড়া-বোলপুর শান্তিনিকেতন, শিয়ালদহ-আসানসোল, হাওড়া-সিউড়ি, ভাগলপুর-মুজফ্ফরপুর, নবদ্বীরধাম-মালদা টাউন, আসানসোল-দীঘা, আসানসোল-টাটানগর। পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না হওয়া বন্ধ থাকবে এই ট্রেনগুলি। পূর্ব রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রী সংখ্যা কম এবং পরিচালনগত অসুবিধার কারণে এই ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে।
করোনায় রেলকর্মীদের আক্রান্তের হার ক্রমশ বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রেলের ৭০টি হাসপাতালও জায়গা দিতে পারছে না আক্রান্ত রেলকর্মীদের। ফলে নতুন করে যাঁরা করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের হোম আইসোলেশন ছাড়া আর কোনও গতি নেই। ভারতীয় রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান ও সিইও সুনীত শর্মা বলছেন, ‘গোটা দেশে রেলের ৭০টি হাসপাতালে প্রায় পাঁচ হাজার বেড রয়েছে। কিন্তু যে ভাবে একের পর এক রেলকর্মী আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন, তাতে এই জায়গা যথেষ্ট নয়।’
বাংলায় বেশিরভাগ অঞ্চল জুড়ে পরিষেবা দেয় ভারতীয় রেলের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে জোন। গত দশ দিনে দুই রেলওয়ে জোনের প্রায় তিন হাজার কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবার উপরেও। সরাসরি ট্রেন চালানোর সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের মধ্যে মোটরম্যান, গার্ড, সিগন্যাল ও টেলিকম বিভাগের কর্মীরা, বিভিন্ন ইয়ার্ড ও শেডের কর্মীরা সংক্রমণের শিকার হওয়াতেই এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন পূর্ব রেলের কর্মীদেরই একাংশ।
এর পাশাপাশি পূর্ব রেলের কর্মীদের সংগঠন ইস্টার্ন রেল মেনস ইউনিয়নের (ইআরএমইউ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতাল এবং শিয়ালদহে বি আর সিং হাসপাতালে নতুন করে রোগী নেওয়ার মতো জায়গাই নেই। এর মধ্যে বিআর সিং হাসপাতালের চিকিৎসকদের কয়েক জন জানাচ্ছেন হাসপাতালে যে ‘রিকভারি ওয়ার্ড’ খোলা হয়েছে তার অবস্থাও ভয়াবহ। এই কারণেই অনেকে হোম আইসোলেশনে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
Be the first to comment