অক্সিজেনের অভাব দেশ জুড়ে। প্রাণবায়ুর অভাবে রোগী মৃত্যুর হৃদয় বিদারক ছবি উঠে আসছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। আর এবার খাস কলকাতায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে প্রকট হল অক্সিজেনের তীব্র সঙ্কট। চিকিৎসাধীন সব রোগীকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন জোগানো সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আপাতত রোগী ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শহরের সরকারি এই মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৫০ জন করোনা আক্রান্ত, যাদের অবস্থা সঙ্কটজনক। সেই সব মুমূর্ষু রোগীদের প্রয়োজন উচ্চ মাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহ। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে রোগীদের সেই মাত্রায় অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য ভবনের এক শীর্ষ কর্তার স্বীকারোক্তি ‘বেনজির পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ন্যাশনালের যা পরিকাঠামো তাতে ৮০ জন রোগীকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব। সেই জায়গায় ইতিমধ্যে্ ভর্তি রয়েছেন ১৫০ জন। সঙ্কটজনক কোভিড রোগীকে উচ্চ মাত্রায় অক্সিজেন দিতে গিয়ে কার্যত ভেন্টিলেটরে চলে গিয়েছে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা পরিষেবা। যার জেরে প্রতি মুহূর্তে কোভিড আক্রান্তদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। সবাইকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
ন্যাশনালের এক চিকিৎসক বলেছেন, অক্সিজেন সরবরাহের পরিকাঠামোয় যেখানে অক্সিজেনের প্রেসার ৫৫-৬০ থাকার কথা, তা রয়েছে ৪৫। ফলে ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীরা যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন পাচ্ছেন না। হাইফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন ব্যবহার করতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসকেরা। সঙ্কটের কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে বেনজির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরকম আগে ঘটেনি। ন্যাশনালে বেশিরভাগই সঙ্কটজনক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রায় সকলেরই অতি মাত্রায় অক্সিজেন প্রয়োজন।’
এই পরিস্থিতিতে বুধবার সন্ধেয় স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে ন্যাশনাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পৃথক একটি অক্সিজেনের প্যানেল তৈরি করা না হলে পরিস্থিতির বদল সম্ভব নয়। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই পরিকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি বিকল্প পদ্ধতিতে রোগীদের অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু তা না হওয়া পর্যন্ত রোগী ভর্তির প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করার পক্ষপাতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Be the first to comment