তৃতীয়বার বিধানসভার অধ্যক্ষের আসনে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানালেন মমতা

Spread the love

বিরোধী শূন্য বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে শাসকদলের সর্বসম্মতি ক্রমে সপ্তদশ বিধানসভার অধ্যক্ষ নির্বাচিত হলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু অধ্যক্ষ নির্বাচনে বিজেপির কোনও বিধায়ক আসেননি, তাই কোনও ধ্বনি ভোটে অধ্যক্ষ নির্বাচন হল শনিবার। এই নিয়ে তৃতীয়বার অধ্যক্ষ হলেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার অধ্যক্ষ নির্বাচনের জন্যই এই অধিবেশন। এদিনের পরই অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হল অধিবেশন। ফের ২ জুলাই বিধানসভা অধিবেশন শুরু হবে।

অধিবেশনের শুরুতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় অধ্যক্ষ হিসাবে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রস্তাব করেন। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, তাপস রায়, নির্মল ঘোষ সে প্রস্তাব সমর্থন করেন। যেহেতু বিরোধী বেঞ্চে এদিন কেউ ছিল না তাই কোনও দ্বিমত ছাড়াই অধ্যক্ষের নামে সিলমোহর পড়ে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিমানবাবুকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তাঁদের সরকারেরও এবার হ্যাট্রিক হল, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়েরও হ্যাট্রিক হল। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে যে ভাবে বিমানবাবু বিধানসভার গরিমা ও ঐতিহ্য রক্ষা করেছেন। এবারও তাই হবে। এরপর অধ্যক্ষকে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঐতিহ্য মেনে অধ্যক্ষের আসন পর্যন্ত এগিয়ে দেন অধ্যক্ষকে। শপথ নিয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বর্ণময় বিধানসভা। শিক্ষক আছেন, চলচ্চিত্র জগতের মানুষ আছেন, সমাজসেবী আছেন। এটার গরিমা বজায় রাখার দায়িত্ব আপনাদের। অধিবেশন শুরু হলে নিয়মিত বিধানসভায় আসবেন।”

বারুইপুর পশ্চিম কেন্দ্র থেকে এবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিধানসভার অধিবেশনেই তাঁকে ফের স্পিকার নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন দমদম উত্তর বিধায়ক চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এরপর স্পিকার নির্বাচনের জন্য বিধানসভায় ধ্বনি ভোটের সিদ্ধান্ত নেন প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ধ্বনিভোটে ফের স্পিকার হন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে টানা তৃতীয়বার বিধানসভা স্পিকার হলেন তিনি।

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন-

* বহু নতুন সদস্য এবার বিধানসভা ভবনে। পুরনোরা সাহায্য করুন। বিধানসভা চললে আসবেন। মন দিয়ে বিধানসভাটা করুন।

* বিধায়কদের কাছে অনুরোধ এলাকা যেন শান্ত থাকে। কেউ দাঙ্গা করতে এলে মানুষকে বোঝাবেন। বারবার বলবেন এটা মিথ্যা। প্রয়োজনে পুলিশের কাছে এফআইআর করবেন। লেবু কচলালে তেতো হয়। ডাবল ইঞ্জিন চাই বলত। মানুষ তাই ডবল সেঞ্চুরি করে দিয়েছে। আমাকে পর্যন্ত ব্যান করেছে। কেষ্টর ওখানে ২৯ তারিখ ভোট। ২৭ তারিখ সিবিআই পাঠিয়েছে। যারা দাঙ্গা করেছে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়নি।

* রেকর্ড ভোটে জয়ী তৃণমূল। মানুষের সহযোগিতা না পেলে হত না। এটা ইতিহাস। ডবল ইঞ্জিন না ডবল সেঞ্চুরি করে তৃণমূল দেখিয়ে দিয়েছে। মানুষকে ধন্যবাদ জানাই : মমতা

* শাড়ির চেয়ে গামছা বড়। কতগুলো আছে। এসবের মধ্যও আমরা আরও নমনীয় হতে হবে। আরও মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। শান্তিপূর্ণভাবে থেকে জনগণের সেবা করুন। দাঙ্গা করতে চাইলে কেউ এফআইআর করুন। পুলিশকে অ্যাকশন নিতে বলুন।

* কমিশন না থাকলে ৩০টা আসন পেত না। সেন্ট্রাল ফোর্সের নামে কী অত্যাচার করেছে। রিগিংয়ে সহায়তা করেছে কমিশন। চিরকুটে লিখে বদলি করে দিয়েছে। হোস পাইপের মত টাকা খরচ করেছে নির্বাচনে। তবু মানুষকে পাশে পায়নি।

* কী অপরাধ করেছে বাংলা? নতুন সরকারের ২৪ ঘণ্টা হয়নি। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় দল। বাংলার মানুষের ম্যান্ডেট মানতে পারছে না। এসপি, ডিএম বদলে দিয়েছে। হিংসা পছন্দ করি না। আমরা শান্তির পক্ষে। দয়া করে হিংসা ছড়াবেন না। ৯৯ শতাংশ ফেক ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে। মানুষের নিদান মানতে না পেরে হিংসা করছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*