বিধানসভা ভোটে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি । দু’শোর বিজয়রথ শেষ পর্যন্ত একশোতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে । আর তার পর থেকেই একের পর এক তৃণমূলত্যাগীরা পুরানো দলে ফিরতে চাইছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে । সেই গুঞ্জন এবার শান্তিকুঞ্জ থেকেও ভেসে আসতে শুরু করেছে । কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, শিশির অধিকারী নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন ।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাবা কাঁথির বর্ষীয়ান নেতা শিশিরবাবু এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ । কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, ছোট ছেলে সৌমেন্দুকে তৃণমূলে ফেরাতে চাইছেন শিশিরবাবু । দাঁড় করাতে চাইছেন পৌরসভা ভোটে । আর সেই সংক্রান্ত বিষয়েই কথা বলার জন্য তিনি নাকি ফোন করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে।
এই গুঞ্জনের বিষয়টি নিয়ে শিশিরবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি শুরুতেই মেজাজ হারান । সাংসদের সাফ বক্তব্য, তাঁর প্রয়োজন পড়ে না কাউকে ফোন করার । গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা পর্যন্ত রাজনৈতিক যাত্রা… গোটাটাই নিজের যোগ্যতায় । কারও পদলেহন করে নয় । আর যিনি তাঁর পরিবারকে এত কটু কথা বলেছেন, তাঁকে আর ফোন করার কোনও প্রশ্নই নেই।
তবে তিনি তো এখনও সেই তৃণমূলেরই সাংসদ। এই বিষয়ে অবশ্য শান্তিকুঞ্জের অভিভাবকের বক্তব্য, দলে তিনি আছেন, কি নেই… তা দল বুঝবে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল রাজ্যের মৎসমন্ত্রী অখিল গিরির সঙ্গেও। অধিকারীরা তৃণমূলে থাকাকালীনও শান্তিকুঞ্জের বিরোধী গোষ্ঠী বলেই পরিচিত ছিলেন অখিল গিরি। অধিকারীদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে কখনও পিছপা হতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে এবার আশ্চর্যজনকভাবে তিনিও বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। বলছেন, একজন সাংসদ হিসেবে তিনি ফোন করতেই পারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা দলনেত্রীকে। কিন্তু সৌমেন্দুকে দলে ফেরানোর বিষয়ে কোনও কথা হয়েছে কিনা, তা তিনি জানেন না।
রাজ্যে যখন ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে একের পর এক দলবদলু নেতা-নেত্রীর ঘর ওয়াপসি ইচ্ছার কথা শোনা যাচ্ছে, তখন শান্তিকুঞ্জের এই গুঞ্জন নিঃসন্দেহে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা দিল । এমনটাই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
নেত্রী আগেই বলেছেন, যাঁরা দল ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁরা ফিরতে চাইলে স্বাগত। তবে আগামী ছয় মাস সেই সব নেতা-নেত্রীদের গতি প্রকৃতির উপর নজর রাখার কথাও হচ্ছে । তারপরই দল সিদ্ধান্ত নেবে বলে সূত্রের খবর। এখন দেখার, শান্তিকুঞ্জের এই গুঞ্জন শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়।
Be the first to comment