ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত ৷ তারই মধ্যে কেশপুর বিধানসভার মহিষদাতে বিরোধীদের প্রয়োজনীয় খাবারের দ্রব্যাদি সহ চা না দেওয়ার ফতোয়া জারি করল তৃণমূল ৷ আর তাতেই রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায় । যদিও এই ফতোয়ার বিরুদ্ধে নেমেছে খোদ ঘাটালের সাংসদ অভিনেতা দেব ৷ তিনি বলেন, যারা এই ফতোয়া দিয়েছে তাদের সঙ্গে পার্টির কোনও সম্পর্ক নেই।
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৷ গোটা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গলমহলে প্রতিদিনই বেড়েছে হিংসার বাতাবরণ । খোদ বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী আক্রান্তদের দেখতে এসে আক্রান্ত হয়েছেন শাসকদলের কাছে । বিরোধীদের মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়া, দোকানপাট লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে । এরই মধ্যে কেশপুরে তৃণমূলের ফতোয়া ঘিরে দেখা গেল চাঞ্চল্য ।
সাংসদ দেবের গ্রাম মহিষদায় পোস্টার দিয়ে নাম করে করে জানানো হয়েছে এই ১৮ জন ব্যক্তিকে কোনোরূপভাবে খাবার এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যে বিক্রি করবে তার বিরুদ্ধে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে । এছাড়া সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তিদের যারা চা পান করাবে বা দোকানে বসতে দেবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে শাসকদল ।
এ বিষয়ে কেশপুরের বিজেপি নেতা তন্ময় ঘোষ বলেন, “এই ফতোয়া নতুন নয় । ২০২১ এর নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে এলাকায় তৃণমূলের দাদাগিরি । বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর লুটপাট, বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া যেমন চলছে , তেমনি অপরদিকে বিরোধীদের গ্রামছাড়া করা, মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো এবং নতুন করে ফতোয়া জারি করছে শাসকদল । এলাকায় বিরোধীদের প্রয়োজনীয় খাবার, ভূসিমাল দ্রব্যসহ যাবতীয় জিনিস বয়কট করা ।
এছাড়াও ১৮ জন বিরোধী কর্মী-সমর্থকের নামে দেওয়া হয়েছে পোস্টার লিফলেট । সেই পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে যারা তাদের সাহায্য করবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেবে তৃণমূল । এখানে রাজনীতি হিংসা অব্যাহত রয়েছে । আমরা আমাদের দলকে জানিয়েছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য । আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।”
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের এই ফতোয়া তীব্র বিরোধিতা করেছেন ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দেব । তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেছেন, ” আমি আমার দলের কেশপুরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ তারা আমাকে বলেছে যে এমন কোনও ফতোয়া দল বা কোনও কর্মী দেয়নি ৷ তবে এমন ঘটনা আমি কখনই সমর্থন করি না ৷ আমাদের যারা ভোট দিয়েছে তারা যেমন রাজ্যের মানুষ তেমনি যারা ভোট দেয়নি তারাও রাজ্যের সঙ্গে আমার সাংসদ এলাকার মানুষ । তাই আমি এর তীব্র বিরোধিতা করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও আর্জি জানাচ্ছি । এরই সঙ্গে আবেদন করছি সমস্ত মানুষ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভাল থাকুক সুস্থ থাকুক এবং একসঙ্গে মিলেমিশে থাকুক ৷ “
Be the first to comment