ফের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় তোপ দাগলেন অমর্ত্য সেন। কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তিনি মন্তব্য করেছেন করোনা সংক্রমণ রোখার জন্য পদক্ষেপ না নিয়ে নিজেদের কাজের কৃতিত্ব আদায় করতে ব্যস্ত ছিল কেন্দ্র। আর এই অবস্থাকেই ‘স্কিৎজোফ্রেনিয়া’ রোগের সঙ্গে তুলনা করেছেন অমর্ত্য সেন।
শুক্রবার ‘রাষ্ট্রীয় সেবা দল’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নোবেলজয়ী বলেন, ‘সরকারের স্কিৎজোফ্রেনিয়ার জন্যই ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ।’ তিনি মনে করিয়ে দেন, দেশেই টিকা উৎপাদন শুরু হয়েছিল। ভারতীয়দের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি। ফলে অতিমারির সঙ্গে লড়াই করার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থাতেই ছিল দেশ। কিন্তু তবুও যে সংক্রমণ ভয়াবহ চেহারা ধারণ করেছে। তার কারণ সরকারের ‘সংশয়াচ্ছন্ন’ মনোভাব। সেই প্রসঙ্গেই অর্থনীতিবিদ ব্যবহার করেন ‘স্কিৎজোফ্রেনিক’ শব্দটি। যে অসুখে সত্য বিচার করার ক্ষমতা হারিয়ে ভ্রমের মধ্যে বাস করে মানুষ। সরকারও সেই একই অসুখে আচ্ছন্ন বলেই ব্যঙ্গ করেন অমর্ত্য সেন।
তাঁর আরও বক্তব্য, ‘প্যানডেমিক কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেকথা না ভেবে সরকার নিজেদের পিঠ চাপড়াতেই বেশি ব্যস্ত ছিল। গোটা বিশ্বের কাছে কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যেন ভারতই গোটা বিশ্বকে রক্ষা করবে। আর সেই ফাঁকেই জেঁকে বসে মহামারী। দেশময় ছড়িয়ে পড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ভারতীয়দের প্রাণ সংশয় ঘটে।’
করোনা অতিমারী মোকাবিলায় মোদি সরকারকে ‘দ্বিধাগ্রস্ত’ বলেও উল্লেখ করেছেন অর্মত্য। তিনি বলেছেন, এই অতিমারির মোকাবিলায় শক্তি অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি ভারত, কারণ সরকার ছিল দ্বিধাগ্রস্ত। অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথকে উদ্ধৃত করে এই মন্তব্য করেন, ‘কেউ ভাল কাজ করলে, আপনা আপনিই সে কৃতিত্ব অর্জন করে।’ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আরও বলেছেন, অতিমারি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ওষুধ উৎপাদন ক্ষমতা ও উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ভারত বেশ ভালো জায়গায় ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকার রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া রোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে তার কাজের কৃতিত্ব নিতেই বেশি আগ্রহী ছিল।’
Be the first to comment