তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেই বিস্ফোরক তথ্য দিলেন মুকুল–পুত্র শুভ্রাংশু রায়। গত শুক্রবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন মুকুল রায় ও তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু। সেদিন বাবা–ছেলেকে পাশে বসিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে ধমকে–চমকে মুকুল রায়কে ভয় দেখানো হয়েছিল। এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়।
তিনি বলেন, ‘বাবার ক্ষেত্রে সত্যিই একটা চাপ ছিল। মানসিক চাপ যদি থাকে তাহলে শরীর–স্বাস্থ্য কোন অবস্থায় যেতে পারে সেটা আমি নিজে চোখে দেখেছি। কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে আগেও ভয় দেখানো হয়েছিল। এখনও ভয় দেখানো হচ্ছে। সবটাই আমাদের নেত্রী জানেন।’
মুকুল রায়ের ছেলের এই বিস্ফোরক অভিযোগে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপির। কারণ তারা যে প্রতিহিংসাপরায়ণ তা আগেই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই বক্তব্যতে সিলমোহর দিলেন শুভ্রাংশু রায়। আর তাতেই এবার ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, ‘আমাদের উপরও তো কত মিথ।এ মামলা করা হয়েছে। কই আমরা তো মাথানত করিনি। তাহলে মুকুল দা নিশ্চয়ই এসব কাজে যুক্ত ছিলেন। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের মামলার ভয়ে সেখানে চলে গেলেন।’
প্রসঙ্গত, একুশের নির্বাচনের সময় সেভাবে মাঠে নেমে খেলেননি রায়সাহেব। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ঝাঁঝালো আক্রমণ করেননি। তাই তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার রাস্তা সহজ হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা। সে কথা অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন মুকুলের প্রত্যাবর্তণের দিন।
শুভ্রাংশুর দাবি, ‘বাবা ওখানে বড় আপসেট ছিল। আমাকে বলেছিল তুই জিততে পারবি কিনা। কৃষ্ণনগর উত্তরের বাইরে বাবাকে এবার কাজ করতে দেখিনি। যেভাবে বাবা চলেন সেটা এবার দেখা যায়নি। বাবা ঠিক মানিয়ে নিতে পারছিলেন না কোথাও না কোথাও একটা জায়গায়। আমার পক্ষেও মানিয়ে নেওয়া একটু কঠিনই হচ্ছিল।’ ফলে বিজেপিতে যে থাকা যায় না তা আবার প্রমাণ করলেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে জবাব দিয়েছেন সৌমিত্র খাঁও। তিনি বলেন, ‘২০১৫ সালের পর থেকে মুকুল দাকে দেখেছি সারাক্ষণ অভিষেকের জন্য আপসেট হয়ে পড়তেন। তৃণমূল কংগ্গেস থেকে বিজেপিতে আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলা নিয়ে আপসেট থাকতেন। তাই মুকুল রায় আর রাজনীতি করতে পারবেন না। মুকুল রায় নামটা এবার মীরজাফর রায় হিসাবেই থাকবে।’
তবে বিজেপিতে যে ভাঙন আসন্ন তা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছেন শুভ্রাংশু। তিনি বলেন, ‘কতজন তো যোগাযোগ করেছেন। তাঁরাও চাইছেন বাংলার নেত্রী ভারত শাসন করুক। এই সংখ্যাটা প্রায় ৩০–এর উপর আমি জানি। এখানে বিধায়কের পাশাপাশি সাংসদও কয়েকজন আছে।’ তবে এই কথা মানতে চাননি সৌমিত্র। তাঁর কথায়, দু’চারজন এদিক ওদিক হতে পারে। তবে বিজেপি ছেড়ে এতজন যাবেন না। কেউ মীরজাফরের সঙ্গে গিয়ে কুলাঙ্গার হবে না।
Be the first to comment