ধনখড়কে বদলের সম্ভাবনা, পাল্লা ভারী আরিফ খানের দিকে

Spread the love

আচমকাই দিল্লিতে তলব করা হল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে? হঠাৎ কেন তাঁকে ডাকা হল এই নিয়ে নানা মহল থেকে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ অনেকে অনেক রকম কারণ ব্যাখ্যা করতে শুরু করেছেন ৷ তার মধ্যে অন্যতম হল, কেন্দ্রের তরফে ধনখড়কে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে ৷

যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনই কেন্দ্রের তরফে কোনও কিছু জানা যায়নি ৷ তবে একটি সূত্রের খবর, ধনখড়ের বদলি হিসেবে বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ৷ আর সেই তালিকার একেবারে ওপরের দিকে রয়েছে আরিফ মহম্মদ খানের নাম ৷ তিনি আপাতত কেরলের রাজ্যপালের পদে রয়েছেন ৷ সেখান থেকেই তাঁকে এখানে আনা হতে পারে ৷

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদে এসেছেন জগদীপ ধনখড় ৷ তার পর থেকে একাধিক ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে বিরোধ বেঁধেছে ধনখড়ের ৷ পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ৷ বারবার তলব করেছেন রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের ৷ ইতিমধ্যে মমতা জতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে নরেন্দ্র মোদীর কার্যত প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন ৷

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, রাজ্যপালকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা কেন্দ্রের শাসক দলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে ৷ সেই দিক থেকে ধনকড় কেন্দ্রের মন জুগিয়েই চলছেন ৷ কেন এই সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এই জল্পনা সামনে আসার পর থেকে ৷

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এই নিয়ে একাধিক কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ৷ জগদীপ ধনকড়ের ভূমিকায় কেন্দ্র হয়তো খুশি নয় ৷ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছে, তা নিয়ে রাজ্যপালের আরও কড়া ভূমিকা হয়তো চাইছে কেন্দ্র ৷ তাছাড়া, তাঁর বিরুদ্ধে সম্প্রতি রাজভবনে নিয়োগ ঘিরে স্বজনপোষণের অভিযোগও উঠেছে ৷ তাই হয়তো তাঁকে বদল করা হতে পারে ৷

একই সঙ্গে এই প্রশ্নও উঠছে যে যদি তাঁকে বদল করাই হয়, তাহলে কেন্দ্রের প্রথম পছন্দ কেন আরিফ মহম্মদ খান ? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, আরিফ খান সংখ্যালঘু ৷ তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে এলে এখানকার সংখ্যালঘুদের কাছে বিশেষ বার্তা দেওয়া যাবে ৷ তাছাড়া তিনি মোদি সরকারের লাগু করা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক ৷ তাই পশ্চিমবঙ্গে এই আইন কার্যকর করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন ৷

তাছাড়া কেরলের রাজ্যপাল হিসেবে তিনি একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন ৷ ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের সঙ্গে ইতিহাস কংগ্রেসের মঞ্চে কার্যত ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল তাঁর ৷ এছাড়া তিনি শাহো বানো মামলায় কংগ্রেসের অবস্থানের বিরোধী ছিলেন ৷ সেই কারণে তিনি রাজীব গান্ধির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন ৷ পরে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসেন ৷ বিজেপি থেকে তিনি দু’বার সাংসদ হয়েছেন ৷ তিন তালাক প্রথা রদের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন এবং দোষীদের তিন বছরের কারাবাসের পক্ষেও ছিলেন তিনি ৷ তাই তাঁকে যদি পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়, তাহলে নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে দূরত্ব বাড়বে তবু কমবে না ৷ অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের ৷

যদিও নয়াদল্লির অন্য একটি সূত্র বলছে যে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল বদলের সম্ভাবনা এখনই নেই ৷ বরং রাজ্যের সাম্প্রতিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চায় কেন্দ্র ৷ সেই কারণেই তাঁকে ডাকা হয়েছে ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*