একুশের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস হ্যাট্রিক করলেও বিজেপি ৭৭টি আসন জয়লাভ করেছে। তার মধ্যে দু’জন বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ায় তা নেমে দাঁড়ায় ৭৫টি আসনে। তারপর মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসার পর আরও একটি কমে দাঁড়িয়েছে ৭৪। কিন্তু এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আসন আছে যেখানে সামান্য ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল কংগ্রেস হেরেছে। এবার সেইসব আসনগুলির ফলাফল চ্যালেঞ্জ করতে চলেছে তাঁরা বলে সূত্রের খবর।
দলীয় সূত্রে খবর, এই কম মার্জিনে হেরে যাওয়া আসনগুলিতে আসলে তৃণমূল কংগ্রেস হারেনি। কৌশল করে এবং ঘুরপথ ধরে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন সংগঠিত হয়নি। বিজেপি এই আসনগুলি আদৌ জেতেনি বলে তাঁরা মনে করছেন। এমনকী সেইসব জেলা থেকে আসা রিপোর্টেও সেই তথ্যই উল্লেখ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। এখানে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা বিতর্কের শেষে সরকারি নথি অনুযায়ী, শুভেন্দু অধিকারীর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা—১০,৯৬,৭৩। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা—১০,৭৯,৩৭।
সূত্রের খবর, এমন আরও বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্র আছে। যা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এই কেন্দ্রগুলি হল—ময়না। যেখানে বিজেপি প্রার্থী অশোক দিন্দা ভোট পেয়েছেন—১০,৮১, ০৯। আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সংগ্রাম দোলই পেয়েছেন—১০,৬৮,৪৯। আবার গোঘাট বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী বিশ্বনাথ কারক ভোট পেয়েছেন—১০,২২,২৭। আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মানস মজুমদার পেয়েছেন—৯৮,০৮,০।
বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী স্বপন মজুমদার ভোট পেয়েছেন—৯৭,৮২,৮। আর সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আলোরানি সরকার ভোট পেয়েছেন— ৯৫,৮২,৪। এছাড়া বলরামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী বাণেশ্বর মাহাতো ভোট পেয়েছেন—৮৯,৫২,১। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতো ভোট পেয়েছেন—৮৯০৯৮। কুমারগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও চিত্রটা একই। এখানে বিজেপি প্রার্থী মনোজ ওঁরাও ভোট পেয়েছেন—১১,১৯,৭৪। আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী লিউজ কুজুর ভোট পেয়েছেন—১০,০৯,৭৩।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘সঠিকভাবে ভোট হলে তৃণমূল কংগ্রেস ২৫০টি আসন পেত। সেটা কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্বাচন কমিশন এবং নানা ঘুরপথ ধরে করতে দেওয়া হয়নি। তবে এবার আদালতে তথ্যপ্রমাণ এবং নথি নিয়ে মামলা দায়ের করলে সেগুলি আমাদের হাতে চলে আসবে। যদিও সেটা কতগুলি আসনের ক্ষেত্রে করা হবে এখনি বলতে চাইছি না।’
Be the first to comment