শনিবার দিল্লি সফরের শেষবেলাতেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ জারি রাখলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। অভিযোগ করলেন, রাজ্যে যে ধরনের ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটছে, তা স্বাধীনতার পর দেশের কোথাও দেখা যায়নি। সঙ্গে বললেন, ‘এই সময় গণতন্ত্র, সংবিধান এবং আইনের উপর ভরসা রাখতে হবে।’
তিনদিনের দিল্লি সফর শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল ধনখড়ের। কিন্তু দিল্লিতেই থেকে যান তিনি। শনিবার সকাল ১১ টায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে যান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসেন তিনি। বৈঠকে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে অমিত শাহের সঙ্গে ধনখড়ের কথা হয়েছে।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে ধনখড় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘রাজ্যের কাজ হল আইন- শৃঙ্খলা মজবুত করা। আমরা গণতন্ত্রের সঙ্গে বা সংবিধানের সঙ্গে আপোষ করতে পারি না, আইন নিয়েও আপোষ করতে পারি না।’ তাঁর দাবি, নির্বাচন পরবর্তী হিংসার যে ছবি তা স্বাধীনতার পর আর কোথাও দেখা যায়নি। রাজ্যের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে যা দেখেছি, তাতে মানুষের অবস্থা মুখে বলা যায় না। এই অবস্থা দেখলে যে কোনও মানুষের বুক কেঁপে উঠবে। তাঁর আরও দাবি, ‘বাংলায় হিংসা থামার কোনও লক্ষণই নেই।’
এদিকে, রাজ্যপালের এদিনের বৈঠককে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘রাজ্যপাল ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। সাংবিধানিক পদের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করছেন। রাজ্য বিধানসভা ভোটের হার মেনে নিতে পারেনি বিজেপি। তাই রাজ্যপালকে দিয়ে এসব করাচ্ছে তারা।‘
গত বৃহস্পতিবারও শাহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ধনখড়। সেদিন প্রায় ৪৫ মিনিট মতো বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেননি ধনখড়। তবে একাংশের ধারণা, বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শাহের নালিশ করেছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি শাসনের বিষয়েও কিছু বলতে পারেন বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের। তারপর শুক্রবার কলকাতায় ফেরার কথা ছিল ধনখড়ের। যিনি এবারের দিল্লি সফরে কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন তথা প্রাক্তন বিচারপতি অরুণ মিশ্র, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাজ্যপাল।
সূত্রের খবর, সেই বৈঠকের পর আবারও শাহি সাক্ষাতের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন ধনখড়। সেইমতো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। পরে বৈঠকের কথা নিজেই জানান তিনি। তারপর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, কী এমন কথা বললেন, যে কারণে একই সফরে দু’বার শাহের কাছে গেলেন ধনখড়?
Be the first to comment