বঙ্গে ভোটের পর হিংসা হয়েছে, কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। বুধবার দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এমনই দাবি করতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকী, ভোট পরবর্তী হিংসাকে ‘নাটক’ বলেও উল্লেখ করতে শোনা যায় তাঁকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “ভোট পরবর্তী হিংসা একটা ড্রামা। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি।” অন্যদিকে, সংসদীয় দলের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বাংলা মডেলেই বিজেপিকে উচ্ছেদের ডাক দেন। সঙ্গে তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “বেড়ালের গলায় ঘণ্টা আমিই বাঁধব।”
মমতার সাফ কথা, পশ্চিমবঙ্গ যদি বিজেপিকে নাস্তানাবুদ করতে পারে, তাহলে বাকি রাজ্যগুলি পারবে না কেন? বাংলায় তৃণমূলের জয়ের ফর্মুলা ধরেই যে বাকি রাজ্যগুলিতে বিরোধীরা সাফল্য পেতে পারে, সেই প্রসঙ্গও তিনি উল্লেখ করেছেন। যদিও মমতা এ দিনের বৈঠকে একটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সেটা হল, তিনি বাংলাতেই থাকবেন। কিন্তু বাংলায় থাকলেও বিরোধীদের গলায় ঘণ্টা তিনিই বাঁধবেন।
পাশাপাশি দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে মমতার বার্তা, “বিজেপিকে বাংলার মানুষ ৪৪০ ভোল্ট লাগিয়ে দিয়েছে। আমরা পারলে অন্য রাজ্যও পারবে। খেলা শেষ হয়ে যায়নি, খেলা চলবে। স্থানীয় শক্তিগুলিই দেশকে পথ দেখাবে। যাই হয়ে যাক আমরা মাথা নত করব না।”
তবে বৃহত্তর জোট গঠনের ক্ষেত্রে তিনি যে কংগ্রেসকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেটাও এ দিন ফের একবার সাফ করে দেন মমতা। তিনি বলেন, “সোনিয়াজি চান বিরোধীদের ঐক্য হোক। ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গোটা দেশের লড়াই হবে। দরকার হলে বারাণসীতেও যাব।” ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশের মতো রাজ্য এখনও বিরোধী শিবিরে যোগ না দিলেও পরবর্তী সময় সেটা হতেও পারে, এমনটাও বলতে শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমোকে। তাঁর কথায়, “জগনমোহন, নবীন পট্টনায়েক-সহ সবার সঙ্গেই আমার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আজ তাঁরা সঙ্গে নেই, কাল থাকতেও পারে।”
এছাড়া উল্লেখযোগ্যভাবে আজকের বৈঠকে বামেদের প্রসঙ্গ উত্থাপন হলে মমতা বলেন, “বামেদের আগে ঠিক করতে হবে বড় শত্রু কে। জাতীয় স্তরে ওদের অবস্থান জানাক।” প্রসঙ্গত এই জোটে যে বামেদের তিনি শামিল করতে চান, সেটা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি যদি তেমনই হয়, সেক্ষেত্রে এ রাজ্যে বামেরা ঠিক কোন ভূমিকা নেবে, সেটা এখন থেকেই সাফ করে দিক নেতৃত্ব, এমনটাই দাবি নেত্রীর।
Be the first to comment