রাজনীতি ছাড়ছেন। তবে ‘তিন-চারদিন ধরে অনেক ভেবে’ সাংসদপদ ত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাতের পর একথাই জানালেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
সোমবার নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের পর বাবুল বলেন, ‘আগেই রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখান থেকে সরে আসছি না। আমায় কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে দেখবেন না। অমিত শাহ, নাড্ডাজি আমায় সাংসদপদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত বদলের কথা বলেছেন। এতদিন কাজ করছি। ওঁনারাও বলেছেন। সাংবিধানিক পদ ওটা। আমায় আসানসোলে পাওয়া যাবে। সাংসদ তহবিলের অর্থ যাতে ঠিকঠাক খরচ হয়, তা দেখব। নতুন করে উপনির্বাচন করতে গেলে অনেক খবর। আসানসোল থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, তাতে বুঝতে পেরেছি, আমি যে ছেড়ে দিই, সেটা ওখানকার মানুষ চাইছেন না।’ সেইসঙ্গে বাবুল জানান, সাংসদ হিসেবে যে বাংলো পেয়েছেন দিল্লিতে, তা ছেড়ে দেবেন। ছেড়ে দেবেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও। তবে সাংসদ হিসেবে বেতন নেবেন।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার ফেসবুকে ‘এক গোছা রজনীগন্ধা’-র গান শেয়ার করে বাবুল বলেছিলেন, ‘কিন্তু একটা প্রশ্নের জবাব আমায় দিয়ে যেতেই হবে কারণ এটা প্রাসঙ্গিক। প্রশ্ন উঠবেই কেনই বা রাজনীতি ছাড়তে গিয়েছিলাম? মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সঙ্গে তার কি কোনও সম্পর্ক আছে? হ্যাঁ আছে, কিছুটা তো নিশ্চয় আছে! তঞ্চকতা করতে চাই না তাই সে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেই তা সঠিক হবে – আমায়ও তা শান্তি দেবে।’
সঙ্গে বাবুল যোগ করেন, ‘২০১৪ আর ২০১৯ -এর মধ্যে অনেক ফারাক। তখন শুধু বিজেপির টিকিটে আমি একাই ছিলাম (আলুওয়ালিয়জিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে বলতে চাই, দার্জিলিঙে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা) কিন্তু আজ বাংলায় বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল। আজ পার্টিতে অনেক নতুন উজ্জ্বল তরুণ তুর্কি যেমন আছেন, তেমনই অনেক প্রবীণ বিদগ্ধ নেতাও আছেন। তাঁদের নেতৃত্বে দল এখান থেকে অনেক দূর যাবে এটা বলাই বাহুল্য। বলতে দ্বিধা নেই যে আজ পার্টিতে কোনও একজন ব্যক্তিবিশেষের থাকা না থাকাটা যে কোন বড় ব্যাপার নয় তাও স্পষ্ট হয়েছে এবং এটা মেনে নেওয়াটাই যে সঠিক সিদ্ধান্ত হবে এটাই আমার দৃঢ়, সুদৃঢ় বিশ্বাস!’
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, তাহলে কি তৃণমূলে যাচ্ছেন? সেই প্রশ্নের উত্তর নিজের ফেসবুক পোস্টেই দিয়েছিলেন বাবুল। লিখেছিলেন, ‘অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না। তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিআইএম, কোথাও নয়। একেবারে নিশ্চিতভাবে বলছি। কেউ আমায় ডাকেনি, আমিও কোথাও যাচ্ছি না। আমি বরাবর একপক্ষের সমর্থক। চিরকাল মোহনবাগানকেই সমর্থন করে এসেছি। বাংলায় একমাত্র বিজেপিই করেছি।’ কিন্ত ঘণ্টাখানেক পর সেই লেখা উধাও হয়ে গিয়েছিল। ততক্ষণে এডিট করে বাবুল জানিয়ে দিয়েছিলেন, সাংসদপদ ছেড়ে দিচ্ছেন। সেই ‘অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না’ অংশটি আরও খুঁজে পাওয়া যায়নি বাবুলের পোস্টে।
Be the first to comment