আর্যতীর্থ:
কিছু কিছু তারিখেরা, ছুরির ফলার মতো মনে এসে বেঁধে।
সময় প্রলেপ দিয়ে কিছুটা ভরাট করে যেই বিচ্ছেদে,
তার মুখ পুনঃ খুলে যায় ।কার ছায়া অস্ফুটে ভাসে আয়নায়,
ফিসফিস স্বর জাগে মনের ভেতরে- ‘ এখনো আমার কথা মনে আছে তো রে?’
দৈনিক দেখাশোনা , টুকিটাকি কথা,যে সব ঘটনা স্মৃতি হয়না অযথা, তেমনই অনেক দিন বন্যার মতো আসে ফিরে এসব তারিখে, বোঝা যায় দুইচোখে জল চিকচিকে। নিঃসাড়ে ডেকে যায় ফটো হাসিমুখে, বন্ধুর কাঁধে হাত, পাড়া পিকনিকে,
আলুথালু কিছু ছবি রাখা মুঠোফোনে, কবে তারা উঠেছিলো আজ নেই মনে, বিগত সে দিনগুলো হঠাৎ ঝলসে ওঠে কোনো অবসরে, মনে এসে বলে যায় সেই চেনা স্বরে, ‘ এখনো আমার কথা মনে আছে তো রে? ‘
জীবন ছুটতে থাকে, নিজস্ব গতিবেগে সময়ের সাথে। কাজ, শুধু কাজ ঘোরে সবার মাথাতে, কিভাবে জুটবে ঘর, কাপড় আর রুটি, ঘন্টা মিনিট যায় তাই নিয়ে করে ছোটাছুটি।যেটুকু খুচরো ক্ষণ বেঁচে থাকে আর, খুঁটে খুঁটে খেয়ে নেয় সেটা পরিবার। স্বভাবত, রোজকার কাজকামে জীবিতরা মৃতদের কম মনে রাখে। বৎসর ঘুরে আসা তারিখের ডাকে, হঠাৎ তীব্রভাবে মগজ ঘুলিয়ে দেওয়া স্মৃতিগুলো ঘোরে, সময়ের ধুলো মুছে কেউ যেন বলে ওঠে ‘ এখনো আমার কথা মনে আছে
তো রে? ‘
সকলেই চলে যাবো, সকলেই যায়, শেষ হবে জীবনের চার অধ্যায়। কেউ কেউ এরই মাঝে কটা পাতা লিখে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে, হুট করে ঢুকে পড়ে ফটোর ভেতরে। খাপছাড়া পড়ে থাকে যেসব কাহিনী, স্মৃতিদের ধারা হয়ে স্বতঃপ্রবাহিণী ঢুকে পড়ে তারা বাকিদের গল্পে উপন্যাসে, তারিখের সাথে শোক ফিরে ফিরে আসে। ফিরবেনা যে পথিক, ফটোতে যে আছে বসে জুঁইমালা পরে, স্মৃতি ঝেঁপে বলে যায় সারাদিন ধরে, ‘ এখনো আমার কথা মনে আছে তো রে? ‘
Be the first to comment