ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের (SIT) তদন্তের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হল কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে ৷ আজ, শুক্রবার এই মামলা নিয়ে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি হয় ৷ সেখানেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আদালত ৷
এর আগে এই মামলায় রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সিটের তদন্তের তদারকির দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট ৷ কিন্তু আদালত সূত্রে খবর, এখন দায়িত্ব দেওয়ার মতো শীর্ষ আদালতের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে না পাওয়া যাওয়ায় পূর্ববর্তী রায়ের ওই অংশকে সংশোধন করা হল ৷ আর মঞ্জুলা চেল্লুরকে দায়িত্ব দেওয়া হল ৷
কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ গত ১৯ অগস্ট ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার রায় দিয়েছিল ৷ ওই মামলায় খুন, ধর্ষণ-সহ যে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলি উঠেছিল, সেই অভিযোগের তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে (CBI) ৷ আর কম গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলির জন্য গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল ৷
ওই তদন্তকারী দলে রাখা হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র-সহ সুমন বালা সাহু এবং রণবীর কুমার নামে দুই আইপিএস-কে। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের তরফে আরও ১০ জন আইপিএসের নাম ঘোষণা করা হয় ৷ যাঁদের উপর সিটের তদন্তে সহযোগিতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৷ ওই ১০ জন আইপিএস পাঁচটি জোনে ভাগ হয়ে কাজ করবেন ৷
অন্যদিকে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে যে রায় কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্য়েই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে ৷ যা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে উঠেছে ৷ সিবিআই তদন্তে ভয় পেয়েই রাজ্য সরকার এমন পদক্ষেপ করেছে বলে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷
তবে তৃণমূল কংগ্রেস গোড়া থেকেই ভোট পরবর্তী হিংসার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ৷ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও একাধিকবার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে যখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তদন্ত শুরু করে, তখন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে শাসক দল ৷
ফলে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি এখানেই শেষ হচ্ছে না ৷ আপাতত দেখার শীর্ষ আদালত এই নিয়ে কী নির্দেশ দেয় ! আর সেই নির্দেশ আসার আগে সিবিআই বা সিটের তদন্তে কী উঠে আসে !
Be the first to comment