অবশেষে মুখোমুখি হলেন নরেন্দ্র মোদী-কমলা হ্যারিস ৷ বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজে প্রথম সাক্ষাতে হ্যারিসকে প্রশংসায় ভাসালেন প্রধানমন্ত্রী ৷ বললেন, “আপনার আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়া একটা ঐতিহাসিক ঘটনা ৷ বিশ্বে অনেকেই আপনাকে দেখে উৎসাহিত বোধ করেন ৷” এর আগে জুন মাসে ভারতের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল মোদীর ৷
এদিন কমলা হ্যারিসের সঙ্গে দেখা করে মোদী জানান, ভারত আর আমেরিকার মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ ৷ বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব, বিশ্বের বেশ কিছু সাধারণ বিষয় যেমন গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির বর্তমান সংকট, আফগানিস্তান এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে আলোচনা হয় ৷
সাংবাদিকদের সামনে কমলা হ্যারিসের উপস্থিতিতে মোদি বলেন, “ভারত আর আমেরিকার মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক হওয়াটা খুব স্বাভাবিক ৷ আমাদের মূল্যবোধ একই রকম, ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থও এক ৷” এর সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, ভারত আর আমেরিকার গণতন্ত্র বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে পুরনো ৷ দু’দেশের মধ্যে মূল্যবোধ, সহযোগিতা আর সমন্বয় ধীরে ধীরে বাড়ছে ৷ তিনি বলেন, “আমি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আর আপনার নেতৃত্বে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে ৷” তিনি ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানান ৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কমলা হ্যারিসের মা ভারতীয়, তামিলনাড়ুতে থাকতেন ৷
জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার গুরুত্ব প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “যখন আমাদের গ্রহ খুব কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, সেই সময় আপনারা দু’জনে আমেরিকার দায়িত্বভার নিয়েছেন ৷ খুব কম সময়ের মধ্যে আপনারা অনেক কিছুর মোকাবিলা করার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন ৷ সেটা কোভিড-১৯ হোক, জলবায়ু পরিবর্তন বা কোয়াড ৷”
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আধিপত্য বিস্তার প্রসঙ্গে কমলা হ্যারিস বলেন, “আমেরিকা সব সময় উন্মুক্ত এবং স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিকের উপর জোর দিয়েছে ৷” ভারত, আমেরিকা এবং অন্য শক্তিশালী দেশগুলি বারে বারে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে চিনের আগ্রাসন থেকে মুক্ত করার কথা জানিয়েছে ৷ বিশ্বে দেশগুলির মধ্যে এখন সংযোগ আরও বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আজ কোভিড-১৯, জলবায়ু সংকটের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ৷ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে আমরা একই রকম চিন্তাভাবনা করছি, যা গুরুত্বপূর্ণ ৷”
জলবায়ু সংকটে ভারতের ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “দু’দেশই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একে অপরের মধ্যে সমন্বয়ের গুরত্বের কথা স্বীকার করেছি ৷ প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির দিকে ভারতকে নিয়ে যাচ্ছেন এবং সম্প্রতি ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশন চালু করেছেন ৷ এমনকি জলবায়ুর স্থায়িত্বের কথা মাথায় রেখে জীবনযাপনের ধরন বদলানোর উপরও জোর দিচ্ছেন ৷”
Be the first to comment