মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজে শুভেন্দুর মামলাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল

Spread the love

মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে অনেক আগেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল বিজেপি ৷ এবার সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ কিন্তু নন্দীগ্রামের বিধায়কের এই পদক্ষেপকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের একটি সূত্র থেকেই এমনটা জানা গিয়েছে ৷ ওই সূত্রের দাবি, তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার পরেই কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন মুকুল রায় ৷ কিন্তু দলের তরফেই তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত করা হয় ৷ তাই এই মামলায় আদালতের রায় যাই হোক না কেন, তৃণমূল মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায়ের পাশেই থাকবে ।

ঘাসফুল শিবিরের সূত্র জানাচ্ছে, যদি আদালতের রায়ে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ হয় ৷ আর কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হয়, তখন মুকুল রায় অথবা তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায়কেই সেখান থেকে প্রার্থী করা হবে । যদিও নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী নন মুকুলবাবু । সেক্ষেত্রে ওই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু ৷

অন্যদিকে বিজেপি সূত্রে খবর, মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য মামলার ক্ষেত্রে মূলত মণিপুরের একটি রায়কে ঢাল করতে চলেছে বিজেপি। ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে দলত্যাগ বিরোধী আইনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিধানসভার অধ্যক্ষকে তিনমাস সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। এক্ষেত্রেও বিজেপি একই আশা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ ভাবনাচিন্তা করছে না তৃণমূল কংগ্রেস বরং তারা উপ-নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এক বা দু’জন নয় লাইনে রয়েছেন বেশ কয়েক জন বিজেপি বিধায়ক। শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের সম্মতির জন্য অপেক্ষা। দরজা খুলে দিলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে বিজেপির যাবতীয় প্রতিরোধ।

কিন্তু শাসক দলের সূত্র জানাচ্ছে যে আপাতত সেই পথে হাঁটতে চাইছে না তৃণমূল বরং এক্ষেত্রে তৃণমূল তাঁদেরই দলে নিতে চাইছে, যাঁদের দলবদলের পরও পুনরায় ওই আসন জিতে আসার ক্ষমতা রয়েছে। আপাতত যা ঠিক হয়েছে তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছেড়ে যে সমস্ত বিধায়কেরা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন, তাদের পাশে থাকছে শাসক দল। সেক্ষেত্রে যদি উপ-নির্বাচনও হয়, তাহলে ওই বিধায়কদেরই প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হবে।

এদিকে বিজেপির তরফ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিরোধী অংশ মনে করছে, মুকুল রায়ের বিষয়ে আদালতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেললেন বিরোধী দলনেতা কারণ, উপ-নির্বাচন হলে এখনই জয়ের মতো পরিস্থিতিতে বিজেপি নেই। কাজেই এতে উল্টে মুখ পুড়বে পদ্ম শিবিরেরই।

এক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্ব একটা অংশের মতে, মুকুলের বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত সংঘাত দলের মত বলে দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাতে আসলে সমস্যায় পড়বে বঙ্গ-বিজেপিই ৷ তাই এই বিষয়টি নিয়ে কীভাবে শুভেন্দুকে বুঝিয়ে ধীরে চলো নীতি নেওয়া যায়, তারও ভাবনাচিন্তা বিজেপিতে শুরু হয়েছে বলে খবর।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*