কয়লা দুনীতি মামলায় নয়া মোড়। ভিডিয়ো কনফরেন্সের মাধ্যমে নয়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাজিরা দিতে হবে সশরীরেই। ভবানীপুরের উপনির্বাচনের দিন সোজাসাপ্টা ভাবে একথাই জানিয়ে দিল দিল্লি পাতিয়ালা হাউজ কোর্ট। আগামী ১২ অক্টোবর দিল্লি আদালতে সশরীরে হাজিরা দেবেন রুজিরা ৷ বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী আদালতে এই বিষয়টি জানিয়েছেন ৷ এদিন ওই মামলার শুনানি ছিল ৷ সেখানেই রুজিরার আইনজীবী এই কথা জানিয়েছেন ৷ সেক্ষেত্রে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরার চাপ বাড়লো বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। ভবানীপুরে প্রেস্টিজ ফাইটের দিনই দিল্লি কোর্টে হাজিরা দেওয়ার জন্য রুজিরাকে সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু হাজিরা এড়িয়ে যান রুজিরা।
প্রসঙ্গত, কয়লাকাণ্ডে সবার প্রথম সেপ্টেম্বর মাসেই সস্ত্রীক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই ডাকে অভিষেক সাড়া দেন। তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখিও হন। কিন্তু যাননি রুজিরা। তিনি পাল্টা চিঠি দিয়ে ইডি-র আধিকারিকদের নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, তিনি দুই সন্তানের মা। কোভিড পরিস্থিতিতে একা দিল্লি যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব না। সেই কারণে যেন কলকাতার দফতর থেকে আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে যা প্রশ্ন করার সেটা করেন।
রুজিরার এই আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি আর্থিক তছরূপের তদন্ত করা এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। জানা যায়, অভিষেককে আরও কয়েকবার তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। এই মর্মে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ইডি। চিফ মেট্রোপলিটান আদালতের বিচারক রুজিরাকে সমন পাঠান। একাধিক তলব সত্ত্বেও রুজিরা হাজিরা এড়িয়ে যাচ্ছেন, ইডি-র এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই সমন পাঠানো হয়।
দিল্লি হাইকোর্টে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইডি আধিকারিকরা চাইলে তাঁকে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করতে পারেন। কিন্তু যেটাই করা হয়, সেটা যেন কলকাতাতেই হয়।
দিল্লি তলব থেকে যাতে রেহাই মেলে, তার জন্য আবেদন করেন রুজিরা। আইন মেনে কলকাতাতেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করুক ইডি। এই আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের অভিষেক-রুজিরা। প্রসঙ্গত, এর আগে দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টানা ৯ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডির আধিকারিকরা। তারপর ৪৮ ঘণ্টা যেতে না যেতে ফের সমন পাঠানো হয়েছিল অভিষেককে। কিন্তু দিল্লিতে একবারও যাননি রুজিরা।
একাধিকবার হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইডি কর্তারা প্রথম থেকেই চাইছেন, যাতে সশরীরে হাজিরা দেন রুজিরা। এইভাবে ভার্চুয়ালি হাজিরায় আপত্তি হয়েছে ইডি আধিকারিকদের। রুজিরা সশরীরে আদালতে না এলে, ইডি আরও বড় আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে বলে মনে করছিলেন আইনজ্ঞরা। কিন্তু তার আগেই দিল্লি আদালত স্পষ্ট করে দেয়, সশরীরেই হাজিরা দিতে হবে রুজিরাকে।
Be the first to comment