বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভবানীপুরে ভোট হচ্ছিল। তবে বিকেল গড়াতেই উধাও সেই ছবি। একের পর এক ঘটনায় আঙুল উঠলো পুলিশের দিকে। সূত্রের খবর, ভবানীপুরের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবে। এরপরই নাকি পুলিশ তাঁর আপ্তসহায়ককে গ্রেফতার করে। ঘটনার জেরে ভবানীপুর থানায় এসে হাজির হন কল্যাণ। কিন্তু প্রথমে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বেশ কিছুক্ষণ পর কল্যাণ চৌবে থানায় ঢোকেন।
অন্যদিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে বিজেপি কর্মীকে আটক করার অভিযোগে থানায় এসে বিক্ষোভ জানান ভবানীপুরের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালও। সূত্রের খবর, ভোট চলাকালীন বিকেল ৪ টে নাগাদ রগবীর সিং নামক এক বিজেপি কর্মীকে আটক করে পুলিশ। তবে কেন বিজেপি কর্মীকে আটক করা হল? সেই সদুত্তর পুলিশ দিতে পারছে না বলে দাবি বিজেপির। এর প্রতিবাদে ভবানীপুর থানায় পৌঁছে বিক্ষোভ দেখান প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু তাঁকে থানায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। থানার গেট বন্ধ করে রাখা ছিল।
প্রিয়াঙ্কার দাবি, যাঁরা ভুয়ো ভোট দিচ্ছে, তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। আর যাঁরা প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তাঁকে গ্রেফতার করলো। শেষে পুলিশের উদ্দেশ্যে ‘দালাল’ কটাক্ষ করে থানা থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
অন্যদিকে ভবানীপুর থানা থেকে প্রিয়াঙ্কা বেরিয়ে যাওয়ার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই সেখানে আসেন বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবে। কল্যাণবাবুর অভিযোগ, তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটার পর তাঁরই আপ্তসহায়ককে গ্রেফতার করে নেয় পুলিশ। কল্যাণের কথায়, আমরা এমন আইনের মধ্যে বাস করছি যেখানে আকান্ত হওয়ার পর আমার লোককেই গ্রেফতার করে নেওয়া হয়। দিনেদুপুরে ১০-১২ জন আপনার উপর হামলা চালাচ্ছে, আর আপনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে এলে পুলিশ আপনাকেই গ্রেফতার করে নিচ্ছে। এ কেমন আইন? এবার কার কাছে অভিযোগ জানানো যায় বলুন! কল্যাণের প্রশ্ন, ঠিক কোন অভিযোগে তাঁর আপ্তসহায়ককে গ্রেফতার করা হল? কিন্তু এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পুলিশ দিতে পারছে না বলেই দাবি বিজেপি নেতার।
উল্লেখ্য়, বৃহস্পতিবার দুপুর সওয়া ৩ টে নাগাদ ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎ বোস রোডে এই ঘটনা ঘটে। বিজেপির অভিযোগ, তাঁর গাড়ি আটকে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। কল্যাণকেও নিগৃহীত হতে হয়েছে বলে দাবি। অন্যান্য বিজেপি কর্মীদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপির তরফে নির্বাচন কমিশনে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। ভাঙচুরের ঘটনার পরই কল্যাণের আপ্তসহায়ককেও গ্রেফতার করা হয় অভিযোগ।
তবে ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে পুলিশ। কমিশনকে পুলিশ জানিয়ে দেয় এই ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সংঘর্ষের সম্পর্ক নেই। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানতে পেরেছে এক বাইক আরোহীর সঙ্গে ধাক্কা লাগে কল্যাণ চৌবের গাড়ির। সেখান থেকেই বচসা ও গণ্ডগোলের সুত্রপাত।
Be the first to comment