মমতার গোয়া সফরের প্রাক্কালে জাতীয় রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটালেন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। তিনি মনে করছেন, বিজেপি এমন একটা জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, আগামী কয়েক দশক জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে তাঁরাই। বিজেপি ক্ষমতায় থাক বা না থাক, তাঁদের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে অন্য দলগুলিকে।
এই মুহূর্তে গোয়ায় রয়েছেন প্রশান্ত। সেরাজ্যে তৃণমূলের হয়েই কাজ করছেন পিকে। বৃহস্পতিবারই সেখানে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে প্রশান্ত কিশোর বলেছেন, “বিজেপি আগামী কয়েক দশক ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। ওরা হারুক বা জিতুক। ঠিক যেভাবে কংগ্রেস প্রথম ৪০ বছর ছিল। বিজেপিও তেমনই কোথাও যাবে না। একবার জাতীয় স্তরে ৩০ শতাংশ ভোট পাওয়া মানে, খুব তাড়াতাড়ি তুমি হারিয়ে যাবে না। দেশবাসী ক্ষুব্ধ এবং মোদীকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে, এই ধারণা ভ্রান্ত। বিজেপি কোথাও যাচ্ছে না। আগামী কয়েক দশক এদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।”
বিজেপি সম্পর্কে এই ভবিষ্যদ্বাণী করার পাশাপাশি পিকে মনে করছেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করছেন। ভোটকুশলীর সাফ কথা,”রাহুল ভাবেন বিজেপিকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়াটা সময়ের অপেক্ষা। এটাই ওর সমস্যা। কিন্তু এটা হবে না। সমস্যা হচ্ছে বেশিরভাগ মানুষ এটা বোঝার চেষ্টাই করে না যে মোদি কেন জনপ্রিয়, ওঁর শক্তিটা ঠিক কোথায়। যতদিন না মোদীর শক্তি কতটা আপনি খতিয়ে দেখবেন, ততদিন ওঁর বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছানো যাবে না।” নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে পিকে বলেন,”আজ দেশে জ্বালানির মূল্য আকাশছোঁয়া। অথচ, মোদির বিরুদ্ধে তেমন অসন্তোষই নেই মানুষের।”
বিজেপির সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসাবে বিরোধী শিবিরের ভোট ভাগাভাগীকে দায়ী করেছেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলছেন,”যদি ভোট রাজনীতির দিক থেকে ভাবা যায়, তাহলে লড়াইটা দুই তৃতীয়াংশের সঙ্গে এক তৃতীয়াংশের। দেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করে বা বিজেপির পক্ষে আছে। সমস্যাটা হল, এই দুই তৃতীয়াংশ ভোটের দিকটা ১০, ১২, ১৫টি ভাগে ভেঙে গিয়েছে। কংগ্রেসের প্রভাব যেহেতু কমছে, তাই বিভিন্ন আঞ্চলিক বা ছোট দলের উত্থান ঘটছে।”
Be the first to comment