বিজেপিকে নিয়ে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর যে মন্তব্য করেছেন, তার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি আরও কয়েক দশক দেশের রাজনীতির ভরকেন্দ্রে থাকবে – পিকের এই বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে ৷ গোয়ায় সেই প্রসঙ্গ উঠতেই প্রশান্তের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল মমতাকে ৷ তাঁর দাবি, পিকে বলতে চেয়েছেন, কংগ্রেস যে ভাবে চলছে, তাতে বিজেপি হারবে না ৷ কংগ্রেসকে তুলোধোনা করে এ দিন মমতা আরও বলেন, কংগ্রেস সিরিয়াস নয় ৷ তাদের জন্যই শক্তিশালী হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফর শুরু হওয়ার আগেই প্রশান্ত কিশোর বলেছিলেন, জিতুক বা হারুক আগামী কয়েক দশকে বিজেপি ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে থাকবে ৷ যেমন স্বাধীনতার পরবর্তী ৪০ বছর ছিল কংগ্রেস ৷ তিনি আরও বলেছিলেন যে, ভারতে কোনও রাজনৈতিক দল একবার ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে গেলে দ্রুত প্রস্থানের সম্ভাবনা নেই ৷ পানাজির সাংবাদিক সম্মেলনে আজ এই প্রশ্ন তোলা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পিকের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে ৷ ও বলতে চেয়েছে যে, কংগ্রেস যে ভাবে চলছে, তাতে বিজেপি হারবে না ৷ বিজেপিকে হারাতে হলে শক্ত হাতে লড়াই করতে হবে ৷
কংগ্রেস প্রসঙ্গে এ দিন আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর দাবি, “কংগ্রেস সিরিয়াস নয় বলেই নরেন্দ্র মোদি শক্তিশালী হয়েছে। কংগ্রেস বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে ৷ আমরাও জাতীয় পার্টি। তবে কারও সাহায্য ছাড়া আঞ্চলিক পার্টি হিসেবে উঠেছি ৷ আঞ্চলিক দলগুলিকেই জোটবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী হতে হবে ৷
কংগ্রেসের জন্য তাঁর জোটের দরজা খোলা কি না এই প্রশ্নের জবাবে মমতা বলেন, “আমার রাজ্যে ওরা বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, আমার দলের বিরুদ্ধে লড়েছে ৷ আমি নিশ্চয়ই ওদের ফুলের তোড়া উপহার দেব না !” এক সাংবাদিক বলেন, আজ ঘটনাচক্রে গোয়ায় থাকছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও ৷ তাঁর সঙ্গে মমতা দেখা করবেন কি না প্রশ্নে তাঁর এক লাইনে জবাব, “এ নিয়ে কিছু বলছি না, আমার কাছে যে কেউ আসতে পারেন ৷”
এদিন বারবারই আঞ্চলিক দলগুলিকে জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শুধু বড় দলই কেন্দ্রে ক্ষমতায় যাবে এই চেনা ছক ভেঙে আঞ্চলিক দলগুলিকে শক্তিশালী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি ৷ তাঁর কথায়, রাজ্যের আঞ্চলিক দল শক্তিশালী হলে দেশও শক্তিশালী হবে ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি যে ভোট ভাগ হতে দিতে চান না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ বাংলার ফুটবল ও সংস্কৃতিগত নানা মিল তুলে ধরে বাংলা ও গোয়াকে একাত্ম করার চেষ্টা করেছেন তিনি ৷ তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চান কি না এই প্রশ্নে মমতার সাফ জবাব, “আমি সাধারণ থাকতেই ভালবাসি ৷ অনেকে আছেন, যাঁরা নিজেদের ভিআইপি বলতে ভালোবাসেন ৷ কিন্তু আমি নিজেকে এলআইপি ভাবতেই ভালবাসি ৷ লেস ইমপরট্যান্ট পার্সন ৷”
Be the first to comment