‘জীবনে অনেক দুর্যোগ দেখেছি, সুব্রতদার মৃত্যুর মতো দুর্যোগ কখনও দেখেনি। সুব্রতদার মরদেহ দেখতে পারব না।’ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর ভেঙে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সপ্তাহদুয়েক ধরে এসএসকেএমে ভরতি ছিলেন সুব্রত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরপর দুটি ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। দ্রুত তাঁকে স্থানান্তর করা হয় আইসিসিইউতে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রাত ৯ টা ২২ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।
দুঃসংবাদ পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ মালা রায়। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, রাত ৯টা ২২ নাগাদ সিভিয়ার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তাঁর। সম্প্রতি বুকে যন্ত্রণা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে SSKM হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বর্ষীয়ান মন্ত্রীকে। তাঁর বুকে স্টেন্ট বসে গিয়েছিল। সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু, কালীপুজোর রাতেই ঘটে ছন্দপতন। বৃহস্পতিবার রাতে উডবার্ন ব্লকের বাথরুম থেকে ঘরে ঢোকার সময় একটা সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক হয় বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে। পরে বেডে ফিরতে ফিরতে ফের একবার অ্যাটাক হয়।
জানা গিয়েছে, বর্ষীয়ান নেতার মরদেহ এদিন রাখা থাকবে SSKM-এর কার্ডিওলজি বিভাগে। শুক্রবার সকালে সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পিস ওয়ার্ল্ডে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে। সেখানেই শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন সকলে। তারপর মরদেহ যাবে বাড়িতে। এরপর তাঁর দেহ থাকবে নিজের প্রিয় ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রিনে। এরপর হবে শেষকৃত্য।
মমতার শোকবার্তা
পশ্চিমবঙ্গ সরকার
তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ
নবান্ন
৩২৫, শরৎ চ্যাটার্জি রোড
হাওড়া- ৭১১১০২
স্মারক সংখ্যা: ১৬২/আইসিএ/এনবি
তারিখ: ৪/১১/২০২১
মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তা
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠন মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জীর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।
তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
পাশাপাশি সুব্রতদা ক্রেতা সুরক্ষা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। হাসিমুখে তিনি জেলায় জেলায় ঘুরে আমাদের সরকারের কাজে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন।
এছাড়া কলকাতার মেয়র হিসাবে কলকাতার সামগ্রিক উন্নয়নে তাঁর বিশেষ ভূমিকা স্মরণীয়।
সুব্রতদা ছাত্র আন্দোলনে সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থেকেছেন। ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকেই আমি তাঁর সঙ্গে থেকেছি, তাঁর নেতৃত্বে বড় হয়েছি। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং শারদীয়া দুর্গাপূজার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
সুব্রতদার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি আমার অগ্রজ ও অভিভাবকতুল্য ছিলেন। তাঁর প্রয়াণ আমার কাছে এক বিরাট ক্ষতি শুধু নয়, রাজ্যের তথা দেশের রাজনৈতিক জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি।
আমি ছন্দবাণী-বৌদি সহ সুব্রতদা’র পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Be the first to comment