রেল লাইনে ফাটল। চালকের তৎপরতায় ঝাঁকুনি দিয়ে থমকে রক্ষা পেল ট্রেন। মাঝপথে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে রইলেন যাত্রীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ও রাজবাঁধ স্টেশনের মাঝখানে এই বিপত্তিতে দাঁড়িয়ে পড়ে হাওড়ামুখী ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস।
নিত্যযাত্রীদের থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এ দিন সন্ধ্যায় দুর্গাপুর স্টেশন ছাড়ার পর হাওড়াগামী ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস হঠাৎই ঝাঁকুনি দিয়ে লাইনের উপর দাঁড়িয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আটকে থাকেন যাত্রীরা। দুর্গাপুর স্টেশন ছেড়ে বেশি দূর যেতেই পারেনি ট্রেনটি। কিছুটা এগিয়েই থমকে যায় ট্রেন। সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা।
কী হয়ছে বোঝার জন্য উৎসাহী অনেক যাত্রীই নেমে পড়েন লাইনে। দেখেন লাইনে বড়সড় ফাটল রয়েছে। ৭ টা ১৫ মিনিটে সে খবর চাউর হতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। তারপরেই নেমে আসেন ট্রেনের চালক এবং গার্ড। রেল লাইনে ফাটলের ফলে হাওড়ামুখী ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেস যেমন স্টেশন ছেড়ে খানিক দূর এগিয়ে থমকে যায়। তেমনই বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে অনেকগুলি ট্রেন। হাওড়াগামী মেইন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুর্গাপুর স্টেশন থেকে ওঠা যাত্রী মানকরের বাসিন্দা বিক্রম মণ্ডল বলেন, ‘দুর্গাপুর স্টেশন থেকে একেবারে ঠিক সময় ট্রেন উঠেছিলাম। ট্রেন ছেড়েছিলও ঠিক সময়ে। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ভেবেছিলাম কোনও সাধারণ সমস্যা। ছাড়বে ছাড়বে করেও না ছাড়ায়, ট্রেনের কিছু যাত্রী লাইনে নেমে পড়েন। আমিও ছিলাম তাঁদের দলে।’ দীর্ঘক্ষণ ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকার ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। তড়িঘড়ি লাইনের ফাটল মেরামতিতে নামেন রেল কর্তৃপক্ষ। রাত ৮ টা ৩৮ মিনিট নাগাদ হাওড়ামুখী ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসকে রওনা করিয়ে দেওয়া হয়।
রেল দফতরের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক সুবলচন্দ্র মণ্ডল রেল লাইনে ফাটলের সত্যতা স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, ফাটল দেখা মাত্রই ব্ল্যাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসকে আটকে দেয় ট্রেন চাল। অতি দ্রুততার সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষ রেললাইন মেরামতের কাজ শুরু করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করে ট্রেন রওনা করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, অন্য বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়া হাওড়াগামী ট্রেনগুলিকে লুপ লাইন দিয়ে পার করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে তেমন বিড়ম্বনা তৈরি হয়নি গোটা লাইনে।
তবে এ দিনের ঘটনায় আতঙ্কিত যাত্রীরা। অনেকই দাবি করেন, রেলের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এমন ঘটনা ঘটল। চালকের তৎপরতায় রক্ষা পেল ব্ল্যাক ডায়মন্ড। তা ছাড়া, ট্রেনের গতিও বেশি ছিল না। না হলে বড়সড় বিপদ ঘটতেই পারত। রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কী ভাবে ওই ফাটল হল, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক।
Be the first to comment