ভোট চলাকালীন ফের বেসুরো ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। পুরভোট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক অভিযোগেই যেন সিলমোহর বসালেন তিনি। নিজের দলেরই বিরোধিতা করে তিনি বললেন, ‘ভয় দেখিয়ে ভোট না করলেও পারতেন। বিভিন্ন অভিযোগ পেয়েছি। রানিবাজার সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বহিরাগতরা এসেছে। শিশুসুলভ নেতৃত্বের প্রেক্ষিতে দল বদনাম কুড়োচ্ছে, মানুষের অভিশাপ কুড়াচ্ছে।’ এভাবেই নির্বাচনের মাঝে নেতৃত্বের সমালোচনায় সরব হলেন সুদীপ।
এর আগেও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সমালোচনা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। বৃহস্পতিবারও তার অন্যথা হল না। পুরভোটে বিজেপি গুণ্ডাগিরি করছে বলে অভিযোগ করেছে সে রাজ্যের বিরোধী CPIM এবং তৃণমূল। সেই সুরে কার্যত সিলমোহর দিলেন বিজেপির এই ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক। বিপ্লবকে উদ্দেশ করে তাঁর বক্তব্য, ‘নেতৃত্বের শিশুসুলভ আচরণের জন্য দলের বদনাম হচ্ছে।’ আগরতলার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে আহত তৃণমূলপ্রার্থীর পাশেও দাঁড়িয়েছেন তিনি। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, ‘ত্রিপুরায় পুরভোট প্রহসনে পরিণত হয়েছেন। মমতা আসার পর জার্সি বদল করে CPIM-এর গুণ্ডারা এখন বিজেপিতে। তাদের জন্যই বদনাম হচ্ছে দলের। শিশুসুলভ নেতৃত্ব, মূল শত্রুকে চিহ্নিত করতে ভুল করছে বিজেপি।’
শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিও ক্ষোভ উগরে দেন সুদীপ রায় বর্মণ। তিনি বলেন, ‘যাঁরা রাগ-অভিমান করে দল ছেড়েছেন তাঁদের ফেরানো দরকার। তার বদলে তাঁদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিশুসুলভ নেতৃত্ব, আসল শত্রুকে চিনতে পারছে না।’ একইসঙ্গে তাঁর দাবি, এতদিনের বাম শাসনকে হটাতে যারা এই জগদ্দল পাথরটাকে হটাতে রক্ত জল করেছে, টাকা ঢেলেছে, আজ তারাই আক্রান্ত। এর আগে প্যারাট্রুপার নেতারা নামের তালিকা চেয়েছিল সিপিএমের গুন্ডা কারা , মাফিয়া কারা। আজ তারাই বিজেপিতে। আক্রমণ চালাচ্ছে। তাদের জন্যই বদনাম হচ্ছে দলের। আমি লক্ষ বার এই নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছি। কোনও লাভ হয়নি।’
পাশাপাশি ত্রিপুরার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে চূড়ান্ত হতাশা প্রকাশ করেন বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। অমিত শাহকেও বিঁধতে ছাড়েননি আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র আর অবশিষ্ট নেই ত্রিপুরায়। বিজেপি এমন একটা দল যে বিকাশের কথা ভাবে। কিন্তু, বর্তমান নেতৃত্বের বিকাশের উপর ভরসা থাকলে এভাবে ভোট হত না। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ হলে এত হিংসা কেন! তবে ত্রিপুরার মানুষ জাগ্রত, তারা জবাব দেবেন।’
Be the first to comment