‘সংসদ চলো’ অভিযান আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে নিজেদের আংশিক সাফল্য হিসেবে দেখছে বিক্ষোভরত কৃষকরা। বাকি দাবি-দাওয়াগুলি নিয়ে এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ২৯ নভেম্বর, সোমবার থেকেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে। আর প্রথম দিনেই লোকসভায় কৃষি আইন বাতিলের বিল পেশ করবে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সংসদ চলো অভিযান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল কৃষক সংগঠনগুলি।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা দর্শন পাল আজ বিকেলে জানিয়েছেন, আমরা ২৯ নভেম্বর যে ‘সংসদ চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছিলাম, তা স্থগিত করছি। সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে যে ২৯ তারিখে সংসদে আইনগুলি বাতিল করা হবে।” উল্লেখ্য, আজ দুপুরে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতারা আন্দোলনের পরবর্তী গতি প্রকৃতি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কৃষক নেতাদের ওই বৈঠক শেষে দর্শন পাল জানিয়েছেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। তাতে বেশ কিছু দাবির কথা জানিয়েছিলাম। আমরা দাবি করেছি, কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা বাতিল করা হোক… এমএসপি (ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) নিশ্চিত করা হোক… এই বিক্ষোভ চলাকালীন যে কৃষকরা মারা গিয়েছেন তাঁদের (পরিবার) ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক… কৃষকের বিরুদ্ধে খড়কুটো পোড়ানো নিয়ে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিলও বাতিল করতে হবে।”
আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠির জবাবের জন্য ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন কৃষক নেতারা। তারপরই পরবর্তী গতিপ্রকৃতি স্থির করা হবে।
এ বারের শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্রের তরফে যে ২৬টি বিল পেশ করা হবে, তার মধ্য়ে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কৃষি আইন প্রত্যাহার বিলই। গত সপ্তাহে আইন প্রত্য়াহারের ঘোষণার সময়ই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, অধিবেশন শুরু হতেই দ্রুত আইন প্রত্যাহারের কাজ শেষ করা হবে।
কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার (কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য বিল পেশ করবেন। এই বিল নিয়ে সংসদের দুই কক্ষেই আলোচনাও করা হবে। লোকসভায় বিজেপির প্রত্যেক সাংসদ যাতে উপস্থিত থাকেন, সেই মর্মে এ দিন দলের তরফে হুইপ জারি করা হয়। গতকাল রাতেই রাজ্যসভার সাংসদদেরও একই মর্মে হুইপ জারি করে অধিবেশনের প্রথম দিনে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতে কংগ্রেসের তরফেও লোকসভা ও রাজ্যসভার সমস্ত সাংসদদের অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের জারি করা হুইপে বলা হয়েছে, “সোমবার রাজ্যসভায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সমস্ত সদস্যদের সকাল ১১টা থেকে অধিবেশন শেষ না হওয়া অবধি উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ২৯ নভেম্বর সকল সদস্যের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।” একই নির্দেশিকা লোকসভার সাংসদেরও পাঠানো হয়েছে।
Be the first to comment