তবে কি আরও এক তৃণমূল প্রার্থী বদলের পথে? প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে দলের প্রতীক দিয়েও তা ফিরিয়ে নেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর। রবিবারই তনিমাদেবীকে দলের প্রতীক দিয়ে তা ফেরাতে বলা হয় বলে দাবি সূত্রের। তনিমাদেবী কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছিলেন। এদিন থেকে প্রচারও শুরু করেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে ছন্দপতনের আভাস। যদিও এ নিয়ে তৃণমূলের তরফে বা তনিমা চট্টোপাধ্যায় এখনও প্রকাশ্যে কিছু জানাননি।
সত্যিই যদি তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের টিকিট কাটা যায়, তা হলে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দু’জন প্রার্থীর নাম বদলাল শাসকদল। কেন কালীঘাটে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা, বৈঠকের পরও এমন দোলাচলতা তৈরি হচ্ছে শাসকদলের অন্দরে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে টিকিট দেওয়া হয়েছিল ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে। নাম ঘোষণার পরই রবিবার প্রথামাফিক সই করে দলের প্রতীক তুলতে যান তনিমাদেবী। সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের কার্যালয় থেকে জোড়াফুলের সেই প্রতীক তিনি সই করে তুলেওছিলেন। সেই কার্যালয় ছেড়ে বেরোনোর আগেই তনিমাদেবীকে দলের প্রতীক ফিরিয়ে দিতে বলা হয় বলে দাবি সূত্রের। জানা গিয়েছে, সেই প্রতীক তিনি ফিরিয়েও দিয়েছেন।
তেমনটা হলে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীর নাম ঘোষণা, প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন, প্রার্থীর প্রচার শুরু হয়ে যাওয়ার পরও তাতে বদল হতে চলেছে। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, তনিমা চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী না হলে তাঁর বদলে কাকে টিকিট দেওয়া হবে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে? এই জল্পনায় উঠে আসছে সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়েরই নাম। সুদর্শনা এই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলর ছিলেন। শোনা যায়, এবার দল সুদর্শনাকে প্রার্থী করেনি, কারণ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের এই প্রার্থী নিয়ে আগেই আপত্তি ছিল। কিন্তু আবারও জল্পনায় সুদর্শনার নাম ভেসে আসছে।
এ দিকে রবিবারই দাদা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে প্রণাম করে প্রচারে নামেন ছোট বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়। ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডটি যে ভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায় সাজিয়েছেন, তাতে তাঁর বোনের ঘাসফুল ফোটাতে যে মোটেই অসুবিধা হওয়ার কথা নয় তা মানছেন এলাকার লোকজনও। আত্মবিশ্বাসী তনিমা চট্টোপাধ্যায় নিজেও বলেছেন, “দাদাকে প্রণাম করে বললাম, আমাকে যেন এমন ভাবে আশীর্বাদ করে যাতে আমি তৃণমূল কংগ্রেসকে এই ওয়ার্ডে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারি। সুব্রত মুখোপাধ্যায় এমন একজন মানুষ আর এই ওয়ার্ডের মানুষ এমন ভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা করতেন, যে এই ওয়ার্ডটিকে দাদা সুন্দর করে সাজিয়ে রেখে গিয়েছেন। এখানে ঘাসফুল ফোটাতে বেশি বেগ পেতে হবে না।”
একইসঙ্গে জয় নিয়েও আশাবাদী তনিমা চট্টোপাধ্যায় রবিবার সকালে প্রচারে বেরিয়ে জানিয়েছিলেন, “জনসমাবেশ দেখেই বোঝা যাচ্ছে এখানকার মানুষ কী রকম স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে খুশি হয়ে আমাকে আমার দলকে সমর্থন করছেন।”
এর আগে দেখা গিয়েছে, ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বদল। এই ওয়ার্ডের প্রার্থী করা হয়েছিল মহম্মদ ইয়েজুজার রহমানকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, সংগঠনে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ছিল কাইজার জামিলের বিরুদ্ধে। সেই কারণেই তাঁকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। শনিবার ফের তাঁকেই প্রার্থী করা হয়।
এ নিয়ে তৃণমূল প্রার্থী তথা বিধায়ক দেবাশিস কুমারের বক্তব্য ছিল, কালীঘাটের বৈঠকে আদতে কাইজার জামিলের নামই বেছে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে অন্য প্রার্থীর নাম লেখা হয়। দেবাশিস কুমার বলেন, “যে কোনও কারণেই হোক, ভুলবশত ইয়েজুজার রহমানের নাম প্রকাশ পায়। আজ সেই ভুল শুধরে কাইজারের নাম তালিকায় দেওয়া হয়েছে।”
Be the first to comment