করোনা পরিস্থিতির জেরে রাজ্যে বিধি- নিষেধ জারি রয়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আবারও তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। আর তার জেরেই ফের বাড়ানো হল বিধি- নিষেধের সময়সীমা। মঙ্গলবার নবান্নের তরফ থেকে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ওমিক্রন-এর কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত যে বিধি জারি ছিল, সেটারই মেয়াদ বাড়ল ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
করোনা পরিস্থিতিতে নবান্নের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিষয়ে খতিয়ে দেখার পর বিধি নিষেধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। যে সব বিধি রাজ্যে আপাতত জারি আছে, সেগুলোই থাকবে। রাত ১১ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত নাইট কার্ফু জারি থাকবে। স্বাস্থ্য, আইন ও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার মতো বিষয়গুলি আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
এদিকে ওমিক্রন সংক্রান্ত খবর সামনে আসতে কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে ১২টি দেশের তালিকা তৈরি করেছে। তার মধ্যে রয়েছে ইউনাইটেড কিংডম, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, চিন, মরিশাস, নিউ জিল্যান্ড, জিম্বাবোয়ে, হংকং, সিঙ্গাপুর, ইজরায়েল। এর মধ্যে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর নিয়েই প্রমাদ গুনছে বাংলা। স্বাস্থ্য ভবনও এ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন বলেই জানা গিয়েছে। এই উদ্বেগের কারণ অবশ্য একেবারেই অমূলক নয়।
মঙ্গলবারের বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কেন্দ্রকে জানানোও হয়েছে সে বিষয়ে। বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সীমান্ত এলাকা রয়েছে। সড়কপথ কিংবা আকাশপথেও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে দুই বাংলার। ফলে বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষের সংখ্যা যেহেতু পশ্চিমবঙ্গে অনেক বেশি, তা চিন্তার কারণ। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর থেকে সরাসরি বিমান চলাচল করে কলকাতা বিমানবন্দরে।
তাই বাকি দশটি দেশ নিয়ে ভয় থাকলেও এই দুই দেশ বিশেষ মাথা যন্ত্রণার কারণ স্বাস্থ্যদফতরের। এই দুই দেশের ক্ষেত্রের স্বাস্থ্য দফতরও সতর্ক। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বলাও হয়েছে, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর থেকে যাঁরা আসছেন, বিশেষ সতর্ক থাকতে। করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। আরটিপিসিআর-এ নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত নিভৃতবাসে রাখা হবে।
স্বাস্থ্য ভবনের বক্তব্য, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। অত্যন্ত সহজেই এই ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমিত করতে পারে মানুষকে। ডেল্টার থেকে বহু গুন শক্তিশালী সে। এদিকে বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এপার বাংলার যে জেলাগুলি রয়েছে তা অত্যন্ত ঘন জনবসতিপূর্ণ। শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা।
Be the first to comment