শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছে মনোনয়ন। আর তার জেরেই ক্ষুব্ধ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়। জোড়াফুলের টিকিট বাতিল হওয়ার রীতিমতো বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন তিনি। আসন্ন কলকাতা পৌরনিগম নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হয়েই ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। দাদা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ছবি হাতে নিয়েই বুধবার মনোনয়ন পত্র পেশ করলেন তনিমা চট্টোপাধ্যায়। আসন্ন পৌরভোটে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন প্রয়াত তৃণমূল নেতার বোন।
তৃণমূলের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের। সেই মতো ভোটের প্রচারও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। দলীয় কার্য্যালয় থেকে যখন তিনি নির্বাচনী প্রতীক নিতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁকে সেই প্রতীক দিয়েও দেওয়া হয়েছিল। প্রয়োজনীয় সব সই-সাবুদ করে সেই দলীয় প্রতীক সংগ্রহ করেছিলেন তনিমা চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু পরে সেই প্রতীক আবার ফিরিয়ে নেওয়া হয়। ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর বদলে অন্য কাউকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেয় দল। শেষ মুহূর্তের এই সিদ্ধান্ত বদলে বেজায় ক্ষুব্ধ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন।
তখন থেকেই তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। আজ ছিল পৌরভোটে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। বেলা গড়াতেই দেখা গেল, দাদার ছবি হাতে নিয়ে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন সুব্রতর ছোট বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়।
তৃণমূলের তরফে তনিমা চট্টোপাধ্যায়ের বদলে ওই ওয়ার্ডের বিদায়ি কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়কে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জোড়াফুল শিবিরে এই দ্বন্দ্বের জেরে আগামী দিনে কি বিরোধী দলগুলি বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবে? সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
দলের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোন। জয়ের ব্যাপারেও যথেষ্ট আশাবাদী ছিলেন তিনি। ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডটি যে ভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায় সাজিয়ে তুলেছিলেন, তাতে তাঁর বোনের ঘাসফুল ফোটাতে যে মোটেই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, সে কথা এলাকার লোকেদের একাংশও স্বীকার করে নিয়েছিলেন।
সেই সময় প্রচারে বেরিয়ে আত্মবিশ্বাসী তনিমা চট্টোপাধ্যায় নিজেও বলেছেন, “দাদাকে প্রণাম করে বললাম, আমাকে যেন এমন ভাবে আশীর্বাদ করে যাতে আমি তৃণমূল কংগ্রেসকে এই ওয়ার্ডে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারি। সুব্রত মুখোপাধ্যায় এমন একজন মানুষ আর এই ওয়ার্ডের মানুষ এমন ভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা করতেন, যে এই ওয়ার্ডটিকে দাদা সুন্দর করে সাজিয়ে রেখে গিয়েছেন। এখানে ঘাসফুল ফোটাতে বেশি বেগ পেতে হবে না।”
কিন্তু তারপরেও এই সিদ্ধান্ত বেজায় চটে রয়েছেন তনিমা চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও আজ নির্দল প্রার্থী হিসেবে নিজের মনোনয়ন জমা দেওয়া… আগামী দিনে তৃণমূলের অস্বস্তি কতটা বাড়াবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Be the first to comment