লোকসভায় দাঁড়িয়ে আবারও কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দাগলেন তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের ইস্যুতে শুক্রবার কেন্দ্রকে বিঁধলেন তিনি। এদিন নুসরত বলেন, আমরা সকলেই জানি আর্থিক উন্নতির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের ক্ষেত্রে যে বেতন দেওয়া হত, তা বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য আদর্শ ছিল। এইসব সংস্থাগুলি আমাদের কাছে গর্বের ছিল।’
কেন্দ্রকে আক্রমণ শানিয়ে সাংসদ বলেন, ‘বর্তমানে সরকার মহারত্ন, নবরত্নের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির শেয়ার বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করতে চাইছে। Coal India, IOC, HPCL, SAIL, GAIL, Air India -র মতো সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণ হচ্ছে।’ তাঁর প্রশ্ন,’অলাভজনক সংস্থা বিক্রি করলে একটা যুক্তি থাকত। কিন্তু, লাভজনক সংস্থাগুলিকে বিক্রি করা হচ্ছে কেন?’
নুসরত আরও বলেন, ‘সরকার যদি বিলগ্নিকরণের পথেই হাঁটতে চায়, তাহলে অলাভজনক সংস্থাগুলিকে বিক্রি করুন। কিন্তু, লাভজনক সংস্থা বিলগ্নীকরণের জন্য কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তা কাজ করছে।’
এদিন বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর আবেদন, ‘PPP Model মেনে রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তি বিক্রি করা হোক। এই আর্জি জানাচ্ছি। আর সেক্ষেত্রে শুধু অলাভজনক সংস্থাকেই বিক্রি করা হোক। এইসব সংস্থাকে সম্পূর্ণভাবে বিক্রির প্রক্রিয়া বন্ধ করা হোক। আমি আর আমার দল (তৃণমূল কংগ্রেস) এই লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণের বিরোধিতা করছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলি সম্পর্কে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী তা সংসদে এসে স্পষ্ট করে বলুন।’
দীর্ঘদিন ধরেই এই বিলগ্নিকরণের ইস্যুতে সরব তৃণমূল। গত মাসে সরকারি বিমান সংস্থা Air India-র বিলগ্নিকরণের খবর প্রকাশ্যে আসে। জানা গিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে আরও ছ’টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের উদ্দেশ্যপূরণে দরপত্র আহ্বান করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এবং চলতি আর্থিক বর্ষেই সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার চেষ্টা হবে বলে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ বিলগ্নিকরণ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিয়ন্ত্রণ দফতর সূত্রের খবর।
‘গ্লোবাল ইকনমিক পলিসি সামিট’-এ এই কথাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব তুহিন কান্ত। তিনি জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে প্রায় ১৯ বছর পরে ৫-৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ বাস্তবায়িত হবে। অবশ্য অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণের বিষয়টি গত ফেব্রুয়ারি মাসেই পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে অর্থের সংস্থানের পাশাপাশি সামগ্রিক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
Be the first to comment