শনিবার নাগাল্যান্ডে গুলি চালানোর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ঘটনার ন্যায়বিচারও চাইলেন তিনি। এদিকে বিবৃতি দিয়ে অসম রাইফেলস জানিয়েছে, এই ঘটনায় ‘গভীর ভাবে অনুতপ্ত’ বাহিনী।
উল্লেখ্য, শনিবারই নিরীহ নাগরিকদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল নিরাপত্তারক্ষীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে এক জওয়ানও রয়েছেন বলে খবর। আহত বহু। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নেইফু রিও।
এই পরিস্থিতিতে টুইটারে পোস্ট করে মমতা লেখেন, নাগাল্যান্ড থেকে উদ্বেগজনক খবর। মৃতদের পরিবারকে জানাই সমবেদনা। সেই সঙ্গে যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন এই ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত হয় এবং সমস্ত আক্রান্তরা ন্যায়বিচার পান।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নাগাল্যান্ডের হোম কমিশনার অভিজিৎ সিনহা ঘটনাস্থল যে জেলায় অবস্থিত, সেই মন জেলায় ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত মন জেলার সমগ্র অঞ্চলের মোবাইল ইন্টারনেট, ডেটা পরিষেবা, এসএমএস পরিষেবা বন্ধ রাখার জন্য সমস্ত সার্ভিস প্রোভাইডারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে নাগাল্যান্ডের মন জেলার ওটিং গ্রামে সন্ত্রাস দমন অভিযান চালাচ্ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। অভিযোগ, সে সময় স্থানীয় জঙ্গি সংঠন এনএসসিএন-এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের উপর গুলি চালান নিরাপত্তারক্ষীরা। অসম রাইফেলস তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েই ওই গ্রামে অভিযান চালানো হয়েছিল। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে।
ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। তিনিও সিট গঠন করে তদন্তের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। ওই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, অসম ও মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে নাগা স্বাধীনভূমি বা ‘নাগালিম’ গড়ার ডাক বহুদিনের৷ এই দাবিতে অনেক দিন ধরেই জঙ্গি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এনএসসিএন৷ সংগঠনটি দু’ভাগ হয়ে যাওয়ার পর মুইভা গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে কেন্দ্র৷ কিন্তু অপর অংশটি এখনও জঙ্গি আন্দোলন চালাচ্ছে। সেই জঙ্গি আন্দোলন দমন করতেই ওই এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেসময়ই এই ঘটনা ঘটে।
Be the first to comment