বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী লাগোয়া জেলার দক্ষিণ দিনাজপুর। বরাবরই দক্ষিন দিনাজপুর জেলার কৃষকরা মূলত ধান, পাট, গম ও সরষে চাষ করে থাকেন। আর তাই কৃষি প্রধান জেলা হিসাবেই পরিচিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। প্রায় একবছর ধরে গাঁদা ফুলের চাষ করেও লাভের মুখ দেখছেন জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের শিববাড়ি এলাকার চাষিরা। গঙ্গারামপুর ব্লকের শিববাড়ি এলাকার কৃষকরা আগে মূলত ধান, পাট, গম ও সরষে চাষ করতেন। দিনদিন এই সব ফসলের দাম কমায় ও কৃষির খরচ বাড়ায় অন্য চাষের চিন্তাভাবনা করছিলেন এলাকার কৃষকরা।
অবশেষে কয়েক বছর আগে এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক গাঁদাফুল চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথমে অল্প জমিতে তাঁরা শুরু করেন এই চাষ। নদিয়ার রাণাঘাট থেকে গাঁদা ফুলের চারা নিয়ে আসেন এখানকার কৃষকরা। আশ্বিন মাসে জমি তৈরি করে চারা বোনা হয়। সব মিলিয়ে খুব বেশি হলে একবিঘা জমিতে ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ভাল ফলন হলে ফুল বিক্রি হয় দ্বিগুণ দামে। এতে লাভের হার অনেকটাই বেশি হয় ধান, গম, পাট বা ভুট্টা চাষের থেকে। আর শীতকালে নানান অনুষ্ঠানে গাঁদা ফুলের চাহিদাও অনেক বেশি থাকে। তাই সেইসময় দামও ভালো পাওয়া যায়। চলতে থাকা করোনা মহামারীর ফলে ব্যবসায় প্রভাব পড়লেও এখন অনেকটা ফের সাবলম্বী হচ্ছেন চাষীরা।
গাঁদাফুলের চাষ করছেন বিষ্ণুপদ সরকার। তিনি জানান, তাঁর সামান্য কিছু জমি ছিল, সেই জমি ও অন্যের থেকে জমি লিজ় নিয়ে তাতে গাঁদা ফুল লাগিয়েছেন। ২৫ পয়সা দরে চারা এনে জমিতে লাগান। অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে তিনি বাজারে ফুল বিক্রি শুরু করেন। একবিঘা জমিতে চাষ করতে ১২-১৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই টাকা এক মাসেই উঠে এসেছে বলে জানান বিষ্ণুপদবাবু।
তিনি আরও জানান, তাঁকে দেখে এলাকার আরও কৃষক গাঁদাফুল চাষে এগিয়ে আসেন।জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, বিকল্প চাষের জন্য নানা সরকারি প্রকল্প রয়েছে। এতে খুব কম খরচে চাষ করতে পারবেন কৃষকরা। বলাই বাহুল্য, গাঁদা ফুলের চাঁষ করে যথার্থ লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা।
Be the first to comment