কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, রাজ্য পুলিশ দিয়েই কলকাতা পৌর ভোট করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । নির্বাচন কমিশন ও কলকাতা পুলিশের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চ। ফলত কলকাতা পৌর ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানোর দাবিতে বিজেপি যে মামলা করেছিল, তা খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আজ মামলার শুনানিতে বিজেপির আইনজীবী সুরিন্দার কুমার কাপুর বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে কী হয়েছিল, তা সবাই জানে । এফআইআর করার পরও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি । রাজ্যে একটা ভয়ের পরিবেশ রয়েছে । আইন-শৃঙ্খলা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের ৷ কিন্তু রাজ্য এ ব্যাপারে সক্রিয় নয় । শান্তিপূর্ণভাবে যাতে ভোট দেওয়া যায়, আমরা সেটা দেখার আবেদন জানাচ্ছি।”
নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী রত্নাঙ্ক মুখোপাধ্যায় বলেন, “১৩ নভেম্বর এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মিটিং হয়েছে । পুলিশ অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে । ১৪ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে সিসিটিভি ইনস্টলেশন-এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।”
কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর বলেন, “পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে ৷ ভয়ের আবহ দূর করে ভোট করা হোক ।” রাজ্যের তরফে আইনজীবী অনির্বাণ রায় বলেন, “যে চারজনের অভিযোগ নিয়ে বিজেপি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে, তাদের এফআইআর-এর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে । তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে । আর কেন্দ্রীয় বাহিনীর যে দাবি তোলা হচ্ছে, সেটা নির্বাচন কমিশনের দেখার দায়িত্ব। কী করা হবে না হবে, সেটা নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে ।”
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা জানান, ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে ৷ কলকাতা পৌরভোটে রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটতে পারে, খানিকটা এই অনুমান থেকে তারা ভয় পাচ্ছে । তবে নির্বাচন কমিশনের তরফ আইনজীবী জানিয়েছেন পৌরভোটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ চারটি অভিযোগ এলেও সেগুলো পুলিশ খতিয়ে দেখেছে এবং ওই চার প্রার্থীর নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ অন্য কেউ অভিযোগ জানালে তাদের জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করবে পুলিশ।
পাশাপাশি রাজ্যের অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলও নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট কলকাতা পৌরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছে। অন্যদিকে বিজেপি নেত্রী তথা আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল আদালতে অভিযোগ জানান, পার্ক স্ট্রিটের একটি স্কুলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পিছনের দিকে একটি গেট রয়েছে। সেই গেট দিয়ে ভুয়া ভোটার ঢোকানোর চেষ্টা চালানো হয়। তিনি বলেন, ছেলেদের মহিলাদের ভোটার কার্ড দিয়ে, বোরখা পরিয়ে ভুয়ো ভোটার ঢোকানো হচ্ছে ৷ এই বিষয়ে আমি একটা মামলা করেছিলাম ৷
কেন্দ্রীয় বাহিনীর আবেদন খারিজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ভালো করে জানি, রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী হিসেবে চলছে ৷ দেখা যাক, ঠিক করে নির্বাচন হয় কি না ৷ যদি কলকাতা পৌরভোটে কোনও রকম হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে, তার জন্য দায়ী থাকবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য পুলিশ প্রশাসন, জানালেন বিজেপি নেত্রী ৷
Be the first to comment